1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
বাঙ্গালী স্বাধীনতার শহীদ দীনেশ গুপ্ত - মুক্তকথা
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২২ অপরাহ্ন

বাঙ্গালী স্বাধীনতার শহীদ দীনেশ গুপ্ত

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শুক্রবার, ৭ জুলাই, ২০১৭
  • ৮০০ পড়া হয়েছে

বিনয়, বাদল, দীনেশ। নবপ্রজন্মের অনেকেই হয়তো এদের চেনেনা। বাংগালী স্বাধীনতার তিন চিরঞ্জীব শহীদ এরা। তাদেরই একজন শহীদ দীনেশ গুপ্ত। আজ যাচ্ছে অমর সেই বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তের জন্মদিন। কমরেড ইসমাইল হোসেন কাতার থেকে তার ফেইচবুকে চিরঞ্জীব এই বিপ্লবীকে নিয়ে কিছু লিখেছেন। ইসমাইল হোসেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল কাতার ‌ও গণজাগরণ মঞ্চ কাতার শাখার সভাপতি। লিখেছেন তার জন্মদিনকে স্মরণ করে অন্তরের অঞ্জলি মিশিয়ে। শহীদ দীনেশের জন্মদিনে তার স্মরণে আমরা ইসমাইল হোসেনের লেখাটি এখানে পত্রস্ত করলাম।

শহীদ দীনেশ গুপ্ত। ছবি-উইকিপিডিয়া থেকে

অন্তরাঞ্জলী ও স্মরণে:

কমরেড ইসমাইল হোসেন

স্বাধীনতা সংগ্রামী, বিপ্লবী শহীদ দীনেশচন্দ্র গুপ্ত (জন্মঃ- ৬ ডিসেম্বর, ১৯১১ – মৃত্যুঃ- ৭ জুলাই, ১৯৩১)
ঢাকা কলেজে পড়ার সময় ১৯২৮ সালে তিনি ‘ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস’-এর কলকাতা সেশনের প্রাক্কালে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস সংগঠিত বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সে যোগদান করেন। শীঘ্রই বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স একটি সক্রিয় বিপ্লবী সংগঠনে পরিবর্তিত হয়। দলের তরফ থেকে দীনেশকে মেদিনীপুরে শাখা স্থাপনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। মেদিনীপুরে এসে দল সংগঠন ও সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যান তিনি। তাঁর দল কুখ্যাত ব্রিটিশ পুলিশ অফিসারদেরকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা করে। স্থানীয় বিপ্লবীদের আগ্নেয়াস্ত্র চালনা শেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। তাঁর প্রশিক্ষিত বিপ্লবীরা ডগলাস(Douglas), বার্জ(Burge) এবং পেডি(Peddy)–এই তিনজন জেলা ম্যাজিস্ট্রটকে পরপর নিধন করেছিল।

রাইটার্স ভবনে হামলা
সংগঠনটি জেলের ইন্সপেক্টর জেনারেল কর্নেল সিম্পসনকে টার্গেট করেছিল যে কিনা জেলখানার বন্দীদের উপর পাশবিক নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত ছিল।এই বিপ্লবীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে তাঁরা শুধু সিম্পসনকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হবেন না, বরং কলকাতার ডালহৌসি স্কোয়ারে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসকদের সচিবালয় রাইটার্স ভবনে আক্রমণ করে ব্রিটিশ অফিস পাড়ায় ত্রাস সৃষ্টি করবেন । ১৯৩০ সালের ৮ই ডিসেম্বর দীনেশ তাঁর দুই সঙ্গী বিনয় বসু এবং বাদল গুপ্তসহ ইউরোপীয় পোশাকে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করেন এবং সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করেন। ব্রিটিশ পুলিশ গুলি শুরু করে।যার ফলশ্রুতিতে এই তিন তরুণ বিপ্লবীর সাথে পুলিশের একটি সংক্ষিপ্ত বন্দুকযুদ্ধ হয়। টোয়াইনাম (Twynum), প্রেন্টিস(Prentice) এবং নেলসন(Nelson)-এর মত অন্য কিছু অফিসার গোলাগুলিতে আহত হয়। পুলিশ দ্রুতই তাঁদেরকে পরাভূত করে ফেলে।কিন্তু এই তিনজনের গ্রেফতার হওয়ার কোনো ইচ্ছে ছিল না। বাদল গুপ্ত পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে নিয়েছিলেন, অন্যদিকে বিনয় এবং দিনেশ নিজেদের রিভলবার দিয়ে নিজেদেরকেই গুলি করেছিলেন। বাদল তৎক্ষণাৎ মৃত্যু বরণ করলেও ভীষণভাবে আহত মুমূর্ষু অবস্থায় দীনেশ ও বিনয় ধরা পড়েন। উভয়কেই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও সেখানেও তাদের উপর ভয়ঙ্কর অত্যাচার চালানো হয়। পুলিশ কমিশনার ট্রেগার্ট অচেতন বিনয়ের হাতের আঙুলগুলি বুটের আঘাতে ভেঙে দেয়। আরও অত্যাচার এড়াতে মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র বিনয় মাথার ব্যান্ডেজের ভেতর দিয়ে মগজে আঙুল ঢুকিয়ে ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ (১৯৩০ সাল) মৃত্যুকে বরণ করেন। এদিকে ডাক্তার-নার্সদের অক্লান্ত সেবায় সুস্থ হয়ে ওঠা দীনেশের উপর চলে অবর্ণনীয় নির্যাতন। এভাবে ক্রমাগত নির্যাতন এবং তারপর চিকিৎসায় সুস্থ করে আবার নির্যাতন চলতে থাকে দীনেশের উপর। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিচারের নামে শুরু হয় প্রহসন। শেষমেষ তার বিরুদ্ধে ফাঁসীর আদেশ দিয়ে তাকে কন্ডেমড সেলে পাঠানো হয়। ইংরেজ সরকার দীনেশের ফাঁসি কার্যকর করার নির্দেশ দেয়।

ছবি উইকিপিডিয়া থেকে

১৯৩১ সালের ৭ জুলাই, ভোরে মাত্র ১৯ বছরের এক তরতাজা তরুণ প্রাণ স্নান শেষে জীবনকে বিদায় জানাতে নিঃশঙ্ক চিত্তে ফাঁসীর মঞ্চে এগিয়ে গেলেন। হাসিমুখে নিজের হাতে ফাঁসীর দড়ি মালার মত গলায় দিলেন।
কর্মরত কারা কর্তৃপক্ষ এসময় জানতে চাইলেন ‘তুমি কি কিছু বলতে চাও?
‘আমাদের বলার অধিকার কারা কেড়ে নিয়েছে, তা তোমরাই ভাল জান। তাই ডু ইওর ডিউটি’- তরুণ দীনেশের ধীর স্থির কণ্ঠস্বর থেকে উত্তর ভেসে এল। এরপর তরুণের হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারিত স্বাধীনতার মন্ত্র ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনির অনুরণন আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে দিয়ে একটি অবিনাশী জীবনের দীপশিখা নিভে গেল।
গুরুত্ব
বাংলাসহ ভারতের অন্যান্য অংশে বিনয়, বাদল এবং দীনেশকে শহীদ হিসেবে সম্মান করা হয়। ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে বিনয়-বাদল-দীনেশের নামানুসারে কলকাতার ডালহৌসি স্কোয়ারের নাম পালটে রাখা হয় বি-বা-দী বাগ।
প্রাথমিক জীবন
বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তের জন্ম হয় তদনীন্তন ঢাকা জেলার (অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মুন্সিগঞ্জ জেলা) যশোলঙে। তাঁর পিতার নাম সতীশচন্দ্র গুপ্ত ও মায়ের নাম বিনোদিনী দেবী। দীনেশ গুপ্তের ডাকনাম ছিল নসু। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে দীনেশ ছিলেন পিতামাতার তৃতীয় সন্তান। সতীশচন্দ্র ছিলেন ডাক বিভাগের কর্মচারী। চাকরির সূত্রে তিনি কিছুকাল গৌরীপুরে অবস্থান করেন। গৌরীপুরের পাঠশালাতেই দীনেশের শিক্ষারম্ভ। পরে নয় বছর বয়সে ভর্তি হন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে। প্রথম দিকে দীনেশ ঢাকার গ্যান্ডারিয়া অঞ্চলে দাদুর বাড়িতে বাস করতেন, পরে উয়াড়িতে পৈত্রিক বাসভবনে চলে আসেন। বাল্যকাল থেকেই দীনেশ ছিলেন নির্ভীক, বেপরোয়া ও বাগ্মী। এই সময় থেকেই তাঁর মনে স্বদেশ চেতনা ও ব্রিটিশ বিরোধিতার আদর্শ সঞ্চারিত হয়েছিল।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT