1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
উত্তর কোরিয়া, চীন, ইরাণ ও রুশিয়া যদি এক হয়ে যায় - মুক্তকথা
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন

উত্তর কোরিয়া, চীন, ইরাণ ও রুশিয়া যদি এক হয়ে যায়

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শনিবার, ৮ জুলাই, ২০১৭
  • ১৯৯ পড়া হয়েছে

হারুনূর রশীদ।।

চীন, রাশিয়া, ইরাণ ও উত্তর কোরিয়া। বিশ্বের চারটি চতুর্মুখী শক্তি। একটি যদি উত্তর হয় তা’হলে অন্যটি দক্ষিন। আর একটি যদি পূর্ব হয় তা’হলে পরেরটি পশ্চিম। আমার দৃষ্টিতে এরা তাই। কিন্তু একটি রাজনৈতিক চেতনাগত দৃষ্টিভঙ্গি আছে ওদের এক বাহুবন্ধনে নিয়ে আসতে পারে!
চীন: চীনারা- বন্ধুত্ব বলুন, আঁতাত বলুন আর মিত্রতা যে ভাষায় বা যে ভাবেই বলি না কেনো সৃষ্টিতে এরা খুব পটু। চীনারা তাদের দেশকে অর্থনীতির এমন এক মার্গে নিয়ে গেছে যে এখন আর কোন আধিপত্যবাদী বা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যতবড় বিনিয়োগই করেন না কেনো চীনের সাম্যবাদী অর্থনীতিকে গ্রাস করতে পারবেন না বরং নিজেরাই উদরস্ত হয়ে যাবেন। মার্কিনীরা চেষ্টাও কম করেনি। বহু অধ্যবসায়ের পর ১৯৮৯ সালে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে তিয়ানেনমেন স্কোয়ারে ছাত্রদের দিয়ে একটানা প্রায় ৫১দিনের ধর্মঘটের একটি কৌশল সাজিয়েছিল কিন্তু হালে পানি পায়নি। চীনারা হজম করে নেয়। এ মার খেয়ে মার্কিনীরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার চীন দেশে বিনিয়োগ করে আজও নৌকা তীরে ভেড়াতে পারেনি।
এতো শক্তিশালী চীন কিন্তু রুশদের সাথে আজ অবদি কোন বিরোধে যায়নি গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতে না পারলেও। যদিও উভয় দেশ ও জাতিই মার্কামারা পাক্কা ‘কম্যুনিষ্ট’।
রুশিয়া: রুশিয়া বিশ্ব রাজনীতিতে তাদের অংশগ্রহন বা নেতৃত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য বহু খেসারত দিয়েছে এবং বলতে গেলে এখনও পর্যন্ত দিয়ে যাচ্ছে। তাদের খেসারতের শুরু সেই ২৫ শে ডিসেম্বর ১৯৯১ সাল থেকে। যখন প্রেসিডেন্ট মিখাইল গরবাচেভ সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট হিসেবে পদ ত্যাগ করেন এবং নব্য স্বাধীন রুশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইয়েলৎসিন শপথ গ্রহন করেন। একদিক থেকে বলতে হয় তারা বুদ্ধীমান ও দূরদর্শী রাজনীতিক বটে। তারা বুঝতে পারে একটা কঠিন পরিবর্তনের হাওয়া ধেয়ে আসছে তাদের দিকে। সে ধাক্কায় পঁচাত্তর বছরের সাজানো সবকিছু চুরমার হয়েও তো যেতে পারে। তার চেয়ে সময় থাকতে নিজেদের থেকেই কিছু রাষ্ট্র যারা আত্মনিয়ন্ত্রনাধিকার কামনা করছে তাদের সেই অধিকার দিয়ে দেয়াই সঠিক রাজনীতি হবে। এবং গরবাচেভ তাই করেন। “পেরেস্ত্রয়কা” ও “গ্লাসনস্ট” অর্থাৎ “পূনর্গঠন ও খোলামেলা”  তত্ত্ব দিয়ে তিনি এর সফল সুরাহা করেন। যদিও অনেকেরই এ কৌশল নিয়ে বিতর্ক আছে। এর ফলে যতদূর মনে পড়ে প্রায় (৯+২)১১টি দেশ মিলে ‘কমনওয়েলথ’ গঠন করেছিল। বিশ্ব ইতিহাসে এ ছিল এক নতুন যুগের সূচনা। স্বাধীনতার জন্য কাউকে রক্ত দিতে হয়নি। পরাশক্তি নিজ হাতে অধীনতার পেরেক খুলে দিয়েছে। আর সেকি একটি মাত্র দেশ! ডজনের কাছাকাছি দেশ বিনারক্তপাতে টেবিলে বসে আলাপ-আলোচনা পর্যন্ত তেমন করতে হয়নি। সত্যিকার অর্থেই এ ছিল দুনিয়াতে এক নবযুগের সূচনা। এর পরও খেসারতের শেষ হয়নি।
দুনিয়াব্যাপী বহু মানুষের ধারনা রুশ-মার্কিনীরা নিজেরা কোন দিন সম্মুখ যুদ্ধে যায় না। অন্যদেরকে দিয়ে লড়াই সাজায় আর এক পর্যায়ে নেতা সেজে সেই লড়াই মিটমাট করে দিয়ে নতুনভাবে গড়ে দেয়ার ব্যবসা ফাঁদে। এ দূর্নামের পরের খেসারত সাম্যবাদী ধ্যান-ধারনা থেকে একটু সরে এসে গণতান্ত্রিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার পথে হাটা। এ পথে হাটতে গিয়ে খেসারত কম দিতে হয়নি পুতিনকে। নিন্দের থালায় ভরে উঠেছে তার প্রাঙ্গন। তার জন্মকুষ্ঠীর কিছুই পাওয়া যায় না। তিনি কোত্থেকে কেমন করে এলেন কিছুই কেউ জানেনা। অনেক গবেষণা করেও তার ‘পুতিন’ সনদের ইতিবৃত্ত কেউ খুঁজে পাননি। রুশ ম্যাগাজিন প্রাভদা ২০১৬ সালে আগষ্টের এক নিবন্ধে লিখেছিল যে পুতিনকে না-কি রুশী রাজকুমার মিখাইল টিভারস্কোয়  এর মত দেখতে। সে অনেক কাহিনী। তবে কোন কিছুতেই হাল ছাড়ার পাত্র নন তিনি। আর যাই হোক মহামতি লেলিনের পাতানো নাতি তো।
ইং-মার্কিন পালের গোদাদের সাথে রুশিওদের যে কোন মিত্রতা নেই বরং শত্রুতা সেই সাবেকি পর্যায়েই রয়ে গেছে, তার বেশ বুঝা যায় বিদ্যমান সিরিয়া যুদ্ধে। ইং-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ, যেখানেই এ দু’জন আছেন, পুতিন সেখানেই তার যুদ্ধজাহাজ নিয়ে দৌড়ে যান এখনও। সেই আফগানিস্তান থেকে বের হয়ে আসার তিক্ত স্মৃতি রুশিরা আজও ভুলেনি।
উত্তর কোরিয়া। রাষ্ট্র হিসেবেই দেশটি সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত্বকে মেনে নেয় না। ব্যক্তিগতভাবে ধর্মপালনেও নিরুৎসাহীত করা হয়। দেশটি প্রাচীন ৫ম শতাব্দির দলিল-দস্তাবেজে প্রমাণ আছে।  কাগজে-কলমে জনগণতান্ত্রিক কোরিয়া। ১৯৪৫ এর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণের পর রুশ দখলে আসে দেশটি। তারা নিজেরা সমাজতান্ত্রিক দেশ বলে কাগজে-কলমে লিখে এবং তাদের নির্বাচন হয়। কিন্তু সমালোচকগন তাদের একটি ‘একনায়কতান্ত্রিক’ দেশ বলেই অভিহিত করেন। রুশিয়দের সাথে যেমন সীমান্ত আছে তেমনি চীনাদের সাথেও আছে। আছে উভয় দেশের সাথেই রাজনৈতিক গভীর সম্পর্ক। প্রায় প্রতি বছরই একবার, হয় জাপান বা মার্কিনীদের হুমকি দেবেই। পারমানবিক অস্ত্র তাদের আছে।
“জুছে” নামে মার্ক্সবাদ-লেলিনবাদের আদর্শ তাদের শাসনতন্ত্রে লিখিতভাবে আছে। সারা দেশের উৎপাদনের উৎস রাষ্ট্র। ব্যক্তিমালিকানাধীন কোন কিছুই নাই। তাদের রাষ্ট্র নীতির মূল কথা “সামরিক বাহিনী প্রথম” পরে আর সব। ফলে ছোট্ট একটি রাষ্ট্রের অস্ত্রধারী মানুষের সংখ্যা ৯৪, ৯৫,০০০। সরাসরি সামরিক যোদ্ধা ১০ লাখ ২১ হাজার মাত্র। এদিক থেকে চীন, আমেরিকা ও ভারতের পরেই তাদের স্থান।
ইরাণইরাণ সুপ্রাচীন আর্য্যদের দেশ। এক সময়ের পারস্য সাম্রাজ্য তাদেরই অবদান। ইরাণ একটি ধর্মবাদী দেশ। তারা মুসলিম ধর্মের শিয়া মতাবলম্বী মানবগুষ্ঠী। ৭ম শতাব্দীতে আরবীয়রা দেশটি দখল করে নিয়েছিল। এর পর তুর্কি ও মঙ্গোলিয়ানগনও দেশটি দখলে নেয় একসময়। ১৫শ শতাব্দির ‘সাফাবিদ’দের আমলে মূলতঃ ইরাণ জাতিগতভাবে একটি পরিচিত তৈরী করতে সমর্থ হয়। এর পর ইতিহাসের দীর্ঘ পথ হাটতে হয়েছে ইরাণকে আজকের অবস্থায় আসতে। আজকের ইরাণের ইসলামিক রিপাব্লিক মহাত্মা খোমেনীর ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের ফসল। ইরাণ এখন মূলতঃ একটি সংসদীয় গণতন্ত্র শাসিত দিব্যতন্ত্রের তত্ত্বাবধানে একতান্ত্রিক নেতৃত্বের দ্বারা পরিচালিত দেশ। অনেকেই মনে করেন ইরাণ পারমানবিক শক্তি অর্জনে সক্ষম দেশ। গ্যাস ও তেল সমৃদ্ধ ইরাণের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার বহু প্রাচীন।
কে না জানে খৃষ্টীয়পূর্ব ৩য় শতাব্দীতে ইরাণীরা আলেকজান্ডারের সাথে যুদ্ধ করেছে। ইরাণের ইতিহাস এতোই সুপ্রাচীন যে এখনও ইরানকে নিয়ে অনেক গবেষণা চলছে। ধর্মীয় দেশ হলেও তাদের বিশ্বপুঁজিবাদ বিরুধী একটি লড়াই এখনও সক্রিয় আছে। আর এখানেই এ চারজনের মিলে যাবার একটি সরু রাস্তা আছে যদি তারা কাজে লাগাতে পারে। বাকী দুনিয়া অবশ্য বসে থাকবে না, সেও ঠিক। কলকাঠি নাড়ানো হবে। কিন্তু সে ছোঁতা দেখিয়ে বসে থাকা অরাজনৈতিক।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT