1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
নামাজের নিয়ত বিতর্ক ভয়ঙ্কর এক পরিণতি ডেকে আনবে নিশ্চিত - মুক্তকথা
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২২ অপরাহ্ন

নামাজের নিয়ত বিতর্ক ভয়ঙ্কর এক পরিণতি ডেকে আনবে নিশ্চিত

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৮
  • ৭৫৯ পড়া হয়েছে

হারুনূর রশীদ।।

আমার মনে আছে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্ক শহরের দু’টি সর্বোচ্চ দালানের উপর আকাশযান দিয়ে হামলার পর মুসলমানদের উপর দোষারূপ করা হয়েছিল। সেদিন বলা হয়েছিল, যা আজও বলা হয় যে, ইসলামে জিহাদের যে আহ্বান জানানো হয় তা’থেকেই এ নমুনার সন্ত্রাসী আক্রমনের চিন্তা মানুষের মাথায় আসতেই পারে। ইসলামের যে শিক্ষা, যা কি-না দুনিয়ার মানুষকে বিভক্ত করে দেখে, যেমন দ্বীন ও বেদ্বীন কিংবা মুসলিম ও অমুসলিমের শিক্ষা। এই বেদ্বীন আর অমুসলিমদের ধ্বংসের জন্য জিহাদের কথা বলে ইসলাম। আর এই জিহাদ কথা থেকেই আসে মানুষে মানুষে ঘৃণা আর হানাহানির অনুপ্রেরণা। জিহাদ মানেই, যা সাধারণ মানুষ বুঝে, মানুষে মানুষে খুনোখুনি, রক্ত ঝরানো। 
২০১১সালেরও আগে আমেরিকার কুখ্যাত প্রেসিডেন্ট সিনিয়র-জুনিয়র উভয় বুশের ইরাক আক্রমনের পর জুনিয়র বুশ যুদ্ধকে বলেছিলেন এটি “এ ক্লেশ অব সিভিলাইজেশন”। এ সময় থেকেই আর একটি কথার গুঞ্জন কানে আসে। সে কথাটি ছিল ইসলাম ধর্মের সংস্কার। সেসময় মুসলমানদের এক পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইসলামের বিরুদ্ধবাদীরাই এসব বলে বেড়াচ্ছেন। আবার ভিন্ন পক্ষ থেকে ইসলাম ধর্মের সংস্কারের উপর, বিশেষ করে ধর্মের মৌলিক বিষয়ের উপর কিছু সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা উঠেছিল। ভেতরে ভেতরে একপক্ষ মেনে নিয়েছিল এই সংস্কারের বিষয়টি। 
এসব কথা সেদিন আমার কাছে খুবই কূটনৈতিক বলেই মনে হয়েছিল। বিশেষ করে ধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধে ভিন্ন মতাবলম্বীদের মিথ্যা প্রচারণা বলেই প্রতিয়মান হয়েছিল।
কিন্তু আজ, সময়ের বিবর্তনে মনে হচ্ছে সেদিন যারা ‘ইসলামের বিরুদ্ধবাদী’ বলে অপরকে দোষারূপের কথা তুলেছিলেন তারা নেহাতই জেনেশুনে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিলেন। তারা ভালভাবেই জানতেন ইসলাম ধর্মের কিছু কিছু ব্যাখ্যা ধর্মকে মানুষের ধারন করা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে। সবকিছু জেনেশুনেই তারা সেদিন কেবলমাত্র নিজেদের স্বার্থ আর চামড়া বাঁচানোর জন্য ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রতি অঙ্গুলি দেখিয়েছিলেন। 
যারা সংস্কারের কথা বলেছিলেন, তারা জেনে হোক বা নাজেনে হোক কিছুটা হলেও ঠিক কথা উচ্চারণ করেছিলেন। 
সেই ১৯৯০ এর ইরাক যুদ্ধ থেকে শুরু করে ২৮ বছর পর আজ এই ২০১৮ সালে এসে যখন দেখি বা শুনি নামাজের নিয়ত পড়ার কোন প্রয়োজন নেই বলে কিছু কিছু ইসলামী মতবাদের গুরুকূল থেকে জোড়ে-সুরে কথা উঠে তখন স্তম্ভিত না হয়ে পারিনা। ভেবে পাইনা, কোন স্বার্থের তাড়নায় সেদিন কিছু কিছু ইসলাম ধর্মীয় গুরু মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে অন্যকে অহেতুক দোষারূপ করেছিলেন। হয়তো তাদের অনেকেই আজও একই সুরে অন্যকে দোষারূপ করেই চলেছেন। অথচ তাদের গোচরে নিশ্চয়ই ইতিমধ্যে পৌঁছে গেছে যে তাদের মতই কিছু কিছু ইসলামী ব্যক্তিত্ব আজ প্রকাশ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসে বলছেন নামাজের নিয়ত পড়তে হয় না।

হতেই পারে, নামাজের নিয়ত মুখ দিয়ে শব্দ করে না পড়লেও চলে। মনের ইচ্ছা কথাটিরই আরবী উচ্চারণ ‘নিয়ত’। সেদিক থেকে মনে ইচ্ছা উদিত হলেই নামাজের নিয়ত হয়ে যায়। পড়ে বলার প্রয়োজন আর থাকে না। কিন্তু কথার এখানেই শেষ নয়। প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে নামাজের যে অনুশীলন চলে আসছে, তাতে মানুষ শুধুই মনের দিক থেকে নয় মন-শরীর উভয় দিক থেকেই নামাজের ওই নিয়মের সাথে একীভূত হয়ে গেছে। ইসলামের কত মুণীঋষি এই নামাজের জন্য প্রান দিয়েছেন তার হিসেব এখানে দেয়া সম্ভব নয়। কোথায় পড়েছিলাম ইমাম আবু হানিফা তার সময়ের বাদশাহের নির্যাতনে কারাগারে থেকে প্রানত্যাগ করেছিলেন। ইসলাম বাদশাহী বা রাজতন্ত্রকে সমর্থন করেনা বরং খেলাফৎ বা প্রতিনিধিত্বকে সমর্থন করে। আর বাদশাহীকে সমর্থন না করার কারণে ইমাম আবু হানিফাকে কারাগারের অন্তরালে জীবন দিতে হয়েছিল।  আজ অবদি কোন মোল্লা-মুন্সি বা মৌলানার ভাষণে কারাগারে থেকে ইমামের প্রান ত্যাগের ইতিহাস শুনিনি। এমনিভাবেই আমাদের ইসলামী গুরুরা তাদের সুবিধামত বয়ান দিয়ে গেছেন শতাব্দীর পর শতাব্দী কেবলমাত্র নিজেদের স্বার্থে।
মনের ইচ্ছার সাথে ‘তেলিপ্যাথি’ নামে একটি বিজ্ঞান কাজ করে। যে জ্ঞানের চর্চ্চা দিয়ে অন্যের মনকে জানা যেতে পারে। মনের সাথে গভীরতর সম্পর্ক গড়ে উঠলেই একজন আরেকজনের সুখ-দুঃখ অনুভব করতে পারে। দূরত্ব এই অনুভবকে নিষ্ক্রীয় করতে পারেনা। আমাদের বঙ্গে একটি কথা প্রচলিত আছে-‘বিদেশ বিভূইয়ে যার পুত্র মারা যায়, পাড়া-পড়শিয়ে জানার আগে জানে তার মা’য়।’ কথাটির তাৎপর্য হল এই যে মা ও সন্তানের যে সম্পর্ক সে সম্পর্ক, নিচক কোন বন্ধন নয়। এ সম্পর্কের সাথে জন্ম-শরীর ও রক্তের এক অদেখা বন্ধন জড়িত। এ সম্পর্ক বা বন্ধন এমন এক বন্ধন যার সাথে অন্য কোন কিছুর তুলনা করা যায় না। অন্য কোন উদাহরণ টানা যায় না। বন্ধনের এই গভীরতার কারণে সন্তানের কোন দূর্ঘটনার খবর মা’য়ের মনে জেগে উঠে সবার আগে। আর এই কাজটিই ‘টেলিপ্যাথী’ বিজ্ঞানের কাজ। মা ছাড়াও মনে মনে এমন সম্পর্ক যারাই গড়ে তুলতে পারবেন তারাই একে অন্যের সুখ-দুঃখ বাস্তবে অনুভব করতে সক্ষম।
এ উদাহরণটি এখানে উল্লেখ করার কারণ একটিই আর তা’হলো বিশ্ব মুসলিমের সাথে নামাজের সম্পর্ক অনেকটা মা-সন্তানের সম্পর্কের মত বলে আমার মত ক্ষুদ্র জ্ঞানীর ধারণা। দেড় হাজার বছরের অনুশীলনে এ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। যুগ যুগ নয়, শতাব্দীর পর শতাব্দী নয়, বর্তমান পদ্বতির নামাজ, মুসলমানদের দেড় হাজার বছরের অনুশীলনের ফসল। এই অনুশীলনে যদি কোন ভ্রান্তি থেকেও থাকে, হাজার দেড় বছরের মানুষের ঐকান্তিক অনুশীলন ক্ষুদ্র সে ভ্রান্তিকে ধু’য়ে-মোছে তত্ত্বে পরিণত করেছে। আমার জ্ঞানে নামাজের এই ‘নিয়তপড়া’ এখন আর কোন অবস্থায়ই ভ্রান্তি নয় বরং প্রথা বা নিয়ম হয়ে উঠেছে। নিঃস্বার্থ, নির্মোহ নামাজিক অনুশীলনে মানুষের মস্তিষ্কক্রিয়া বৃদ্ধি পেয়ে অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে পারে। এ কথার বাস্তব উদাহরণ আছে। এই সহস্রাব্দ কালের একটি অনুশীলনকে যে বা যারাই নাখোচ করতে চান তারা আর যা-ই হোন, জ্ঞানী নন। স্বার্থান্বেষী মূর্খ বা জ্ঞানপাপী!
এ বিশ্ব জোতির্লোক পলে পলে নব নব রূপে গড়ে উঠছে লক্ষ-কোটিহাজার বছর ধরে। রূপান্তরীত হয়ে নব নব রূপে বিকাশ ও প্রকাশ, এ জগৎ প্রকৃতির নিয়ম। বর্তমান বিশ্ব সেই প্রক্রিয়ারই প্রকাশ। পরিবর্তন বা সংস্কার যে ভাষাই বলি না কেনো এটি কোনো প্রয়োজন নয় বরং নিয়ম। সবকিছুই সংস্কৃত হয়ে নব নব রূপে প্রকাশিত হচ্ছে। ধর্মেরও সংস্কারের প্রয়োজন আছে। কিন্তু সংস্কারের নামে নামাজের নিয়তের মতো দেড় সহস্রাব্দের অনুশীলিত একটি প্রথা বা নিয়মকে কোন বিশেষ স্বার্থের কারণে বলি দেয়া সম্ভবতো নয়ই বরং ভয়ঙ্কর এক পরিণতি ডেকে আনবে। এ আমি নিশ্চিত।
লন্ডন: বুধবার
১৭ জানুয়ারী ২০১৭ইং

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT