1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
নেপালে নববধুদের উপর নির্মমতা মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে - মুক্তকথা
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২০ পূর্বাহ্ন

নেপালে নববধুদের উপর নির্মমতা মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শনিবার, ১২ মে, ২০১৮
  • ৩০৬ পড়া হয়েছে

লণ্ডন।।  নারীদের বিরুদ্ধে উত্তাপ-উত্তেজনা দিন দিনই মহামারি আকারে বৃদ্ধি পাচ্ছে নেপালে। অতি সম্প্রতি নেপাল সরকারের এক জরিপে পুরা দস্তুর বিচলিত হওয়ার মত অবস্থা পাওয়া গেছে। জরিপে দেখা গেছে শতকরা ৪৮ ভাগ মহিলা তাদের জীবনের কোন না কোন সময় কোন না কোন রূপের লিঙ্গ বৈষম্যের কবলে পতিত হয়েছেন। জরিপে আরো পাওয়া গেছে এদের এক তৃতীয়াংশ মহিলা বিগত ১২ মাসের মধ্যে লিঙ্গ বৈষম্যের নিদারুণ দূর্ভোগের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন।

বিবাহিত মহিলা ও সকল বয়সের পুরুষদের কাছ থেকে জরিপ নেয়া হচ্ছে। এ জরীপ ভিএসও-এর। ছবি: ভিওসও

নেপালে কর্মরত, লিঙ্গ ও ব্যাপক নিয়ন্ত্রণের ‘ভলান্টারি সার্ভিস ওভারসীজ’এর একজন উচ্চতরকর্মী গীতা প্রধান বলেন, নেপালে যেহেতু এই নারীবিদ্বেষ একটা জাতিগত বিষয় ফলে এসব ঘটনা অজানাই থেকে যায় বেশী। এ প্রসঙ্গে তিনি তার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন। তার অভিজ্ঞতায় নেপালের বাগলাংগ জেলার একজন গৃহস্ত্রীর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এই বাগলাংগ সেই জেলা যেখানে প্রতিনিয়ত মহিলারা এ দূর্ভোগের শিকার হন। এই এলাকার নতুন গৃহীনীরা নিদারুন চাপে থাকেন এই ভাবে যে তারা যা কিছুই করেন সবকিছুকেই দূরবীক্ষন দিয়ে দেখা হয়। কোথায়ও কোন কিন্তু পাওয়া যায় কি-না! ওই এলাকায় মহিলাদের অতি অল্পই ব্যক্তিগত ও আর্থিক সুবিধে ভোগ করতে দেয়া হয়। 

উক্ত কর্মী গীতা প্রধান থেকে জানা যায়, বিবাহিত মহিলা এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের প্রায় ৪০জন বধুর সাথে খুবই গভীরে গিয়ে আলাপ করেছেন এবং ৬টি ফোকাস গ্রুপের মাধ্যমে নবযৌবনপ্রাপ্ত বধুদের দৈনন্দিন জীবনের নানাবিদ সমস্যার বিষয় তুলে আনেন।
নেপালী সমাজে একজন নারীর স্ত্রী হওয়ার অনুশীলন শুরু হয় একেবারে অবোধ বয়স থেকে। তাদের সমাজে লিঙ্গভিত্তিক দায়-দায়ীত্ব গৃহপতি দ্বারা নির্নয় করা থাকে। পুরুষ অর্থ উপার্জনের কাজ করবে আর স্ত্রী দেখাশুনা করবে সন্তানাদি ও সংসার। বাচ্চাদের বিষয়ে, তারা অনুশীলনে থাকবে সেই কাজের যে কাজ ভবিষ্যতে তাকে করতে হবে। কন্যাদের অনেকটা উপেক্ষিত অবস্থায় রাখা হয়। বিয়ের আগ পর্যন্তই তারা অনাদর অবহেলায় সময় কাটায়। ঠিক একই সময় ছেলেদের ভাল শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। প্রাইভেট স্কুলে পাঠান হয়। 
মেয়েদের নিয়মমত ক্লাসে আসতে বারিত করা হয় তাদের রজঃকালীন সময়ে। এমনকি এসময় তাদের বাড়ীতেও একা থাকতে হয়। অনেকটা অস্পৃশ্যের মত। এসময় তারা পরিবারের কাউকে স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারবে না, এমনকি মন্দিরে যাওয়াও নিষেধ থাকে। তারা কোন ধরনের খাদ্যাদি তৈরীতে যেতে পারবে না।
রজঃকালীন সময় মেয়েদের প্রতি এমন বৈমাত্রেয় আচরণ দেখে ‘ভলান্টারি সার্ভিস ওভারসীজ’ কর্মী গীতা গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, নিজের পরিবার দ্বারা একটি মেয়ে এভাবে উপেক্ষিত বঞ্চিত হবে, বিষয়টি নির্বাক হওয়ার মত ঘটনা। রজঃকালীন সময় বহু মেয়েকে ঘরের মেঝেতে একটি কম্বল গায়ে জড়িয়ে ঘুমাতে হয়। এবং এভাবে ৩দিন-রাত কাটাতে হয়।
বিবাহ, মেয়েদের জীবনে এক বিষ্ময়কর পরিবর্তন আনে নেপালী সমাজে বিশেষ করে নেপালের বাগলাঙ্গ জেলায়। বিয়ের পর মেয়েরা স্বামী গৃহে চলে যায়। সেখানে শ্বশুর-শ্বাশুরী, দেবর-ননদদের সাথে তাকে থাকতেই হয় এবং নির্দিষ্ট দায়ীত্ব নিয়েই থাকতে হয়। নবগৃহবধু ঘর-সংসার এবং খাদ্যোৎপাদনে মাঠের কাজের দায়ীত্বে থাকতে হয়। 
এসময় স্বামীরা অর্থোপার্জনের জন্য বাহিরে কাজে চলে যায় এবং দীর্ঘকাল থেকে বাড়ী ফেরে। অসংখ্য পরিবারেই ঝগড়া বিবাদের শুরু হয় স্বামী ফিরে আসার পর।
জরিপে দেখা গেছে, ফিরে আসার পর স্বামী তার রোজগারের অর্থের হিসেব চায় স্ত্রীর কাছে। তার সন্দেহ থাকে স্ত্রী বেহিসেবী খরচ করেছে। এ অবস্থায় ওই সব বধুগন দৈনন্দিনভাবেই অভিযোগ, তিরস্কার ও নির্যাতনের হুমকি-ধামকিতে কালাতিপাত করেন। অনেক সময় ঘটনা মারধোরের পর্যায়ে চলে যায় এবং সে অবস্থায় পরিবারের বড়রা বিশেষ করে শ্বাশুরীগন প্রায় সকলেই ছেলের পক্ষ নিয়েই থাকেন বলে জরিপে পাওয়া গেছে। 
জরীপকারীদের কাছে এক বধু তার অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন এভাবে- “একদা আমার শ্বাশুরী বললেন, দেখো, আমার কথা যারা শুনেনি তাদের সকলকে আমি এভাবে ঝগড়া করে বিদেয় করেছি। তোমাকে আমি আর চাই না। তুমিও এক্ষুনি বিদেয় হও। এরপর আমি চেষ্টা করি আমার বাবার কাছে চলে যাবার জন্য। এ কথা শুনে আমার শ্বাশুরী আমাকে বিশ্রীভাষায় গালি দিয়ে বলেন যে, তুইতো তোর বাবার সাথে ঘুমাস, এজন্যইতো আমাদের জন্য কোন সম্পত্তি আনসনাই মাগী!” 
“এর পর একরাত্রে আমার শ্বাশুরী বলেন, তার সকল সোনা-দানা ফেরৎ দিতে। উত্তরে আমি বলেছি, আমি মরে গেলে আমার শ্মশানে গিয়ে তোমার সোনা-দানার খোঁজ নিও। আর আমি যদি অন্য কোন নাগরের সাথে পালিয়ে যাই তা’হলে আমার ওই স্বামী তোমার সোনা-দানা ফেরৎ দেবে।” এখন কি করবে তা তোমার বিষয়। “আমাকে মেরে ফেলতে পারো।”
সূত্র: ভিএসও থেকে অনুদিত। অনুবাদ: হারুনূর রশীদ

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT