1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
ডাঃ ইশান ও এক বৃদ্ধার গল্প - মুক্তকথা
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:২৯ অপরাহ্ন

ডাঃ ইশান ও এক বৃদ্ধার গল্প

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শনিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০১৯
  • ১৫৮৬ পড়া হয়েছে
ঝড়

গল্প

বিশ্বখ্যাত চিকিৎসক প্রফেসর ডাঃ ইশান খান। তিনি নিউরো মেডিসিন(মস্তিষ্ক) বিশেষজ্ঞ। মস্তিষ্কের সব জটিল রোগের চিকিৎসায় তার খ্যাতি বিশ্বজোড়া। একবার ডাঃ ইশান বিমানে চড়ে  অন্য একটি শহরে যাচ্ছিলেন। কিছুদূরে যেতেই বিমান ঝড়ে কবলিত হলো। কোন উপায় না দেখে পাইলট বিমানের জরুরী অবতরন করালেন দূরের ছোট্ট একটি বিমান বন্দরে। বিমান থেকে সব যাত্রীরা নেমে বাহিরে দাঁড়ালো, ডাক্তার ইশানও নামলেন। তিনি পাইলটকে জিজ্ঞাসা করলেন অন্য কোন উপায়ে শহরে যাওয়া যাবে কিনা। কারন ডাঃ সাহেবের ঐ শহরে যাওয়াটা খুব জরুরী।
সুপরিচিত ডাক্তার ইশান, সকলেই তাকে চেনে। পরিচিত কয়েকজন অনেক ঘুরাঘুরি করে কোন না কোন ভাবে ডাক্তার ইশানের জন্য তিন চাকার একটি ভ্যান গাড়ীর ব্যবস্থা করে দিল। ডাক্তার গাড়িতে রওয়ানা হলেন। মূল সড়কে গিয়ে তাকে অন্য গাড়ি ধরে যেতে হবে। অচেনা গ্রামের মেঠো পথে আঁকাবাঁকা হয়ে গাড়ী চলছে। ততক্ষনে রাত গভীর হয়ে গেছে, চারদিকে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, যেনো আকাশের সব মেঘ আজ ধরার বুকে নামার জন্য উতলা হয়ে উঠেছে।

ঝড়

নাহ, এ পরিস্থিতে আর এই ভ্যান গাড়ীতে বসে থাকা সম্ভব নয়। মনে কিছু ভয় ভয়ও করছে ডাঃ ইশানের। আরো সামান্য কিছু যাবার পর একটা ছোট্ট কুটির দেখা গেলো। সেখানে ভেতরে নিভু নিভু আলো জ্বলছে। ডাঃ ইশান ভ্যান গাড়ী থেকে নেমে টানপায়ে গেলেন ঘরের দিকে। ঘরের বড় দেউরিতে উঠে বুঝতে পারলেন বাড়ীটি বেশ পুরানো। ঘরের বেড়ায় নক্সিকরা কাঠের কাজ। কাজ দেখে মনে হয় কোন এক সময় এখানে কোন শিল্পী কলাকার বাস করতেন বা এখনও করছেন। কিন্তু বাড়ীর ভেতরটা একেবারেই নিঝুম। কোন মানুষ আছে বলে মনে হয় না। মনে একটু ভীতির ভাব জন্ম নেবার আগেই একবৃদ্ধা দরজা খুললেন। বৃদ্ধার চেহারায় একটা সম্ভান্ত ভাব খুঁপির আলোয় উজ্জ্বল হয়ে চিকচিক করছে। মনে মনে ডাক্তার একটু আশ্বস্ত হলেন। বৃদ্ধার কাছে তাঁর সব ঘটনা খুলে বললেন এবং সকাল অবদি থাকার আশ্রয় চাইলেন। বৃদ্ধা একটু মুগ্ধভাব প্রকাশ করে ডাক্তারকে আপ্যায়ন করলেন। ডাক্তার নামাজ পড়তে চাইলে ওজু নামাজের ব্যবস্থা করে দিলেন। নামাজ পড়তে গিয়ে নামাজের জায়গার কাছেই একখানা বিছানার পাশে দেখলেন একটি অসুস্থ ছোট্ট শিশু ঘুমিয়ে আছে। মাঝে মাঝেই শিশুটি কুঁকরে কুঁকরে কেঁদে উঠছে।
নামাজ শেষে ডাক্তার খেয়াল করে দেখলেন বাচ্চাটি খুব অসুস্থ। ডাঃ সাহেব বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাসা করলেন, শিশুটি কে? এবং তাঁর কি হয়েছে? বৃদ্ধা উত্তরে বললেন- শিশুটি আমার নাতি। ওর মা বাবা মারা গেছে বেশ কিছুদিন আগে। তাঁর চিকিৎসা এ দেশে কোন ডাক্তারই করতে পারছেনা। তবে একজন বিশেষজ্ঞ পারবেন বলে সবাই পরামর্শ দিচ্ছেন। আমরা সে ডাক্তার সাহেবের সাথে দেখা করার জন্য যখন চেষ্টা করলাম তখন তাঁরা আমাদের ৬ মাস পরের তারিখ দিয়ে দেখা করতে বলেছেন। শুনুনতো! ৬মাস…! ততদিনে আমার নাতির কি অবস্থা হবে তা ভেবে আমি কোন উপায়ান্তর খুঁজে পাচ্ছিনা। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের শেষে আল্লাহর কাছে বলি ওগো দয়াময় আমার এই অসুস্থ নাতিটিকে তোমার কুদরতী গুণ দিয়ে সুস্থ করে তুলো। আল্লাহগো দয়াকরো আমাদের প্রতি। ডাক্তার সাহেবের সাথে আমার দেখা করার পথ বের করে দাও।
প্রফেসর ডাঃ ইশান বললেন- মা, সে ডাক্তারের নাম কি জানেন? বৃদ্ধা উত্তর করলেন- ডাঃ ইশান। এবার ডাক্তার অঝোর ধারায় চোখের পানি ফেলে কেঁদে উঠলেন। বললেন, “মাগো আমিই ডাক্তার ইশান”। এখন বুঝতে পারছি, কেন আমার যাত্রা ভঙ্গ হলো; কেন ভীষণ আকারে এই ঝড় তুফান নেমে এলো। কেনইবা আমি এ বাড়িতে আশ্রয় নিলাম।
বৃদ্ধা দু’হাত তুলে মহান আল্লাহর দরবারে চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলেন- হে রহমানুর রহিম দয়াল মালিক, আমি কি দিয়ে তোমার এ ঋণ পরিশোধ করবো। বাহিরে তখনও অঝোর ধারায় বারিপাত হচ্ছে। সৃষ্টির প্রতি মহান শ্রষ্টার অজানা রহস্যেভরা কুদরতের এ নমুনায় বৃদ্ধার জীর্ণ কুটিরে চোখের পানিতে জায়নামাজ ভিজিয়ে দিচ্ছেন বিশ্বের নামী চিকিৎসক ডাঃ ইশানও।(সংগৃহীত, লেখক অগ্যাত)

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT