1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
সারা বিশ্বে ঘিঞ্জি বস্তিবাসীর সংখ্যা এক বিলিয়ন - মুক্তকথা
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৮ অপরাহ্ন

সারা বিশ্বে ঘিঞ্জি বস্তিবাসীর সংখ্যা এক বিলিয়ন

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ৬১১ পড়া হয়েছে

হারুনূর রশীদ।। এমন কিছু কিছু সমস্যা রয়েছে যেগুলোর আসলে কোন সমাধান খুঁজে পাওয়া যায় না। এই খুঁজে না পাওয়ার পেছনে অবশ্য বহুবিদ কারণ কাজ করছে। একটি হতে পারে সমস্যার কারণ জানা সম্ভব হয়নি। আরো হতে পারে সমস্যার পেছনের কারণ বুঝে উঠা যায়নি অথবা কারণগুলো এতই স্ববিরোধী বা আত্মবিরোধী যে একটি অন্যটির পক্ষে কাজ করেনা। এর ফলে কার্যকরভাবে সমস্যার মূলে যাওয়া যায় না।
ঘিঞ্জি বস্তি বা ঘেটু অবস্থা এরকমই একটি সমস্যা সারা বিশ্বময় যে এ সমস্যাকে সমূলে উৎপাটন করে মানুষের মুখে একটু হাসি ফুটানো দিন দিন অসম্ভব হয়ে দেখা দিচ্ছে।
অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও কিছুটা সত্য যে দুনিয়ার বহু দেশে কিছু কিছু মানুষ অকল্পনীয় নোংড়া বস্তিতে ঘৃণিত এক জীবন নির্বাহ করে চলেছে যা কোন অবস্থাতেই মানব সভ্যতার পক্ষে নয় বরং পুরোপুরি বিপরীতে। অথচ মানবেতর এমন জীবন যাত্রা থেকে মানুষকে বের করে নিয়ে আসা অনেকটা দুঃসাধ্য বিষয় হয়ে দেখা দিয়েছে। এ সমস্যা ব্যাপক ও বিস্তৃতভাবে দ্রুত বর্ধমান একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধি এ সমস্যার বহু কারণের একটি কারণ। জনসংখ্যার এমন দ্রুত অপরিকল্পিত বাড়ন্তি প্রতি দিনই কিছু মানুষকে জীবন রক্ষা করতে গিয়ে মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য করছে।
সারা বিশ্বে এরূপ ঘিঞ্জি বস্তিবাসীর সংখ্য মোট এক বিলিয়ন। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে একমাত্র মুম্বাই শহরে ঘিনঘিন বস্তিবাসীর সংখ্যা প্রায় ২০লাখ এবং সারা ভারতে সে সংখ্যা সাড়ে ৬কোটি। বাংলাদেশে এমন বস্তিবাসীর সংখ্যা কেবল ঢাকা শহরেই ১০,৬০,০০০জন এবং পুরো বাংলাদেশে এ সংখ্যা হলো ২২লাখ ৪৭হাজার ৮৩০জন। পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৪৭ভাগই বস্তিবাসী। এর পরিমান দিন দিন বাড়ছে।
সারা বিশ্বে বড় বড় মোট ৫টি ‘স্লাম’ বা ঘিঞ্জি বস্তি রয়েছে। সবচেয়ে বড় বস্তিটি রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে। দ্বিতীয়টি কেনিয়ার নাইরোবিতে। তৃতীয়টি ভারতের মুম্বাই শহরে। চতুর্থ টি রয়েছে করাচীর অরাঙ্গি শহরে পাকিস্তানে। সর্বশেষ বৃহৎ ঘিঞ্জি বস্তি রয়েছে মেক্সিকো দেশের মেক্সিকো শহরে।


মুম্বাইয়ের এ বস্তীর পাশদিয়ে বয়ে চলেছে শহরের বিরাট ময়লা নিষ্কাশন নালা।

বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন যেসব দেশ উপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদী শাসন-শোষণ থেকে বের হয়ে আসতে চাইছে, দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে, অর্থনৈতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়ে থাকা থেকে আন্তর্জাতিক সমাজে উঠে আসতে চাইছে, দেশের অভ্যন্তরে  নিরন্তকাল ধরে চলে আসা দলগত দ্বন্দ্ববিরোধের নিষ্পত্তি করার পথে হাটছে এবং এমনকিছু কারণের পৃষ্ঠপোষকতা করছে যার ধাক্কা কাছের উন্নয়নশীল দেশগুলোর গায়ে লাগছে না; সেসব দেশেই ঘিঞ্জি বস্তী জীবনের জন্ম হয়েছে ব্যাপকহারে। দারীদ্রতাই মানুষের মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য করে। যে সব মানুষের আয়-রোজগারের কোন উপায় নেই, নিকট ভবিষ্যতে রোজগারের একটা ব্যবস্থা হবে এমন আশাও নেই সেসব মানুষ বাধ্য হয়েই অর্থাভাবে এমন জীবনযাপনে বাধ্য হয়। কারণ এসকল মানুষের না আছে ঘরে খাবার-দাবার, না আছে অসুখে ঔষধ, দুনিয়াকে বুঝার জ্ঞান বা শিক্ষা কিংবা এমন কোন উপায় এদের হাতে নেই যা দিয়ে তারা তাদের দুরাবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারে কিংবা দূরে কোথায়ও পালাতে পারে; নিরীহ নিরোপরাধ এসব মানুষই দারীদ্রতার খপ্পরে পড়ে গিয়ে এমন দুঃখজনক জীবন যাপনে বাধ্য হয়। দারীদ্রতার কারণে অবশেষে নিরাশ হয়ে গিয়ে বন্ধী হয়ে পড়ে এমন নিগৃহীত নিষ্ঠুর জীবনের কাছে। এমন অবস্থার সহজ সরল ব্যাখ্যা হলো- সমাজে বিদ্যমান সম্পদের অসম বন্টনকে বুঝা ও তার উপশম করা। একই সাথে  প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা ও চলমান অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার সুযোগ বিদ্যমান রাখা। প্রশ্ন হচ্ছে, একটি দেশের সম্পদের অসম বন্টন কিভাবে কি দিয়ে শুরু হয়? উত্তরটা বেদনাদায়ক হলেও খুবই সহজ যে, যাদের সম্পদ আহরণের সুবিধে রয়েছে তাদের চাহিদা অফুরান। তারা আরো চায়! অথচ তাদের চোখের সামনে মানুষের এমন দূর্বিসহ ভয়ঙ্কর দুঃখময় জীবন যাপন চোখের সামনে ঘটে যাচ্ছে দেখেও এসব মানুষ শুধুমাত্র নিজেদের আরাম-আয়েশের জন্য মুখ ফিরিয়ে রাখে। যুক্তি দেখায় যে নিরীহ গরীব মানুষ সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা বুঝেনা। তাদের আরো যুক্তি, মানুষ দরীদ্র হয় নিজকর্মদোষে! সেই দরীদ্রদের সম্পদের ভাগ দেয়ার অন্য অর্থই হলো অপচয়। এরা সম্পদের সদব্যবহার জানেনা। এভাবে সমাজের স্থিতিশীলতা হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ে। অনুমানের উপর ভরকরে তাদের আরো বক্তব্য যে সম্পদের বন্টন নয় বরং মালিক নিজেই যদি তার সম্পদের সুষ্টু ব্যবস্থাপনা করে তাতে সমাজ সমৃদ্ধ হয়ে গড়ে উঠে। সমাজ সমৃদ্ধ হলে দারীদ্রবিমোচন সহজ হয়।


কলকাতার “আনন্দের শহর” খ্যাত ঘিঞ্জি বস্তি।

দুনিয়ার ধনিক সম্প্রদায়ের এমন অলিক মিথ্যে সুবিধেবাদী চিন্তার কারণে বিশ্বব্যাপী দুঃখজনক ঘৃণ্য দারীদ্রপীড়িত বস্তিজীবন বেড়েই চলেছে। তাদের এমন চিন্তা-চেতনা কিংবা মানসিকতা প্রসূত যৌক্তিকতার সমস্যা হলো- একদিকে তারা তাদের ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে অতিমাত্রায় আশাবাদী অন্যদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রুত হারে বিস্তৃত হচ্ছে দুঃখজনক দারীদ্রতা। সকল মানুষেরই পেটের দায় সারানো আগে। দরীদ্র গরীব মানুষজনের বেলায়ও পেটের দায় একই। সমাজের উপরের অর্থনৈতিক স্তর থেকে তাদের জন্য সম্পদ বরাদ্ধ দেয়া হবে এমন কথার উপর পেটকে বেঁধে রাখা যায় না। আর ধনিক সম্প্রদায় সম্পদের ব্যবস্থাপনার নামে অতিরিক্ত আয়ের ব্যবস্থা করার নিমিত্তে যে কাজ করে যায় সেখানে জন্ম নেয় সম্পদের সবচেয়ে হিংস্র লোভী ব্যবস্থাপক। এ ব্যবস্থাপক বিভিন্ন নমুনায় হতে পারে। হতে পারে রাজনৈতিক নেতার রূপে কিংবা ব্যক্তিমালিকানা ব্যবসার ব্যবস্থাপক রূপে।  মানুষ যখন রাজনৈতিক ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ে তখন নেতা বা ম্যানেজারকে জবাবদিহিতে আনতে পারেনা। সমস্যার মূল নিহীত এখানেই।
হারুনূর রশীদ, লণ্ডন ১৪ডিসেম্বর শনিবার ২০১৯সাল

রাজধানী ঢাকার একটি ঘিঞ্জি বস্তি।
ধারাবি ঘিঞ্জি বস্তি, মুম্বাই।

কলকাতার একটি ঘিঞ্জি বাজার।

মুম্বাইয়ের ধারাভি ঘিনঘিন বস্তি।
মুম্বাইয়ের ধারাভি ঘিনঘিন বস্তির পাশ দিয়ে চলেছে রেল লাইন। কলকাতার একটি ঘিনঘিন বস্তি।
এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT