1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
রাজাকার শর্ষিণার পীরের স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার করা হোক! - মুক্তকথা
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২২ পূর্বাহ্ন

রাজাকার শর্ষিণার পীরের স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার করা হোক!

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ১১৭৯ পড়া হয়েছে

শহীদুজ্জামান জোয়ারদার।। ৭১-এর যুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সরকার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে জিহাদ হিসেবে প্রচার করতে থাকে। পত্র-পত্রিকায় জিহাদের জন্যে অর্থ দানের আহবানও করা হয়। ইসলামের নিয়ম অনুসারে যুদ্ধ বন্ধীদের গনিমতের মাল হিসেবে ভোগ করা যেহেতু জায়েজ, সেহেতু তারা বাংলার নারীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পাকিস্তানীদের ভাষায় বাংলার নারীদের গর্ভে তারা সাচ্চা মুসলমানের বাচ্চা জন্ম দিতে আগ্রহী। একাত্তরের নয় মাস হিন্দুদের উপরও চলে অমানবিক নির্যাতন। হিন্দু নারীদের গনিমতের মাল হিসেবে গণ্য করা হয়। সেই ক্ষেত্রে শুধু পাকিস্তানীরা নয়, বাংলার অনেক আলেমও হিন্দু মেয়ে ধর্ষণ করা ইসলামে জায়েজ এমন ফতোয়া দেয়। গবেষণা করে অনেকে দুই লাখ নারী ধর্ষণের ঘটনার কথা বললেও বাস্তবতা হল ধর্ষণের সংখ্যা ছিল প্রায় চার লাখ। কারণ বেশির ভাগ পরিবার সম্মানহানির ভয়ে নির্যাতনের ঘটনাগুলো চেপে গেছেন।
৭১-এ বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ১০ ভাগের চেয়ে সামান্য বেশি ছিল হিন্দু জনসংখ্যা। কিন্তু ধর্ষিতাদের মধ্যে ৪২ ভাগ ছিল হিন্দু রমণীরা। যাদের মধ্যে ৪৪ ভাগ ছিলেন অবিবাহিত নারী। অর্থাৎ; কুমারী হিন্দু নারীরাই ছিলেন ধর্ষকদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু। পাকিস্তানীদের এসব কাজে সাহায্য সহযোগিতা করেছে স্থানীয় দালাল, রাজাকার ও ধর্মীয় নেতারা। তাদের মধ্যে একজন হলেন-শর্ষিণার পীর আবু সালেহ মোহাম্মদ জাফর। এছাড়া হিন্দুদের ধর্মান্তর করে মুসলমান করা হয়েছিল বহু জায়গায়। স্বরোচিষ সরকারের জরিপ থেকে দেখা যায়, বাগেরহাট জেলায় এ রকমের প্রচুর ধর্মান্তর হয়েছিল। এই ধর্মান্তরিত হিন্দুদের গরু খাইয়ে তাদের মুসলমানত্বকে পাকা করা হতো। মরে গেলে পোড়ানোর বদলে তাদের কবর দেওয়া হতো। এছাড়া হিন্দুদের মন্দিরকে মসজিদ তৈরির ঘটনা তো ছিলই। যাই হোক, আমরা শর্ষিণার পীরের বিষয়ে ফিরে যাই।


শর্ষীণার আবু সালেহ মোহাম্মদ জাফর।

১৯৭২ সালে ৫ জানুয়ারি ‘পূর্বদেশ’ পত্রিকার রিপোর্ট;
“শর্ষিণার পীর আবু সালেহ মোহাম্মদ জাফর ধরা পড়েছেন। গত শনিবার পয়লা জানুয়ারি শর্ষিণা থেকে তাকে গ্রেফতার করে বরিশাল সদরে নিয়ে যাওয়া হয়। গত ১২ই নবেম্বর ৫ শতাধিক রাজাকার, দালাল ও সাঙ্গপাঙ্গসহ মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করলে তখন থেকে পীর সাহেবকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়।

উল্লেখ্য, নরঘাতক টিক্কা খানের আমলে ঢাকার ফরাসগঞ্জের লালকুঠিতে যে সকল পীর, মাদ্রাসার মোহান্দেস-মোদাররেস ও দক্ষীণপন্থী রাজনীতিক রাজাকার বাহিনী গঠন করা, প্রতিটি মাদ্রাসাকে রাজাকার ক্যাম্পে পরিণত করা এবং সকল মাদ্রাসার ছাত্রকে রাজাকার ও পুলিশ বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় শর্যিণার পীর সাহেব তাদের অন্যতম।
শর্ষিণার পীর সাহেব দাওয়াতে হানাদার বাহিনী বরিশালের বিভিন্ন স্থানে হত্যাযজ্ঞ চালায় এবং অগ্নি সংযোগ ও লুট করে এবং শর্ষিণা মাদ্রাসার ৫ শতাধিক তালেবে এলেম প্রায় ৩০টি গ্রামে হামলা চালায় এবং বাড়ি ঘর ও বাজার লুট করে কয়েক কোটি টাকার সোনা, খাদ্যদ্রব্য, আসবাবপত্র ও নগদ টাকা এনে পীর সাহেবের “বায়তুল মালে’- ‘গনিমত হিসেবে’ জমা দেওয়া হয়। তারা হিন্দুদের বাড়ির ভিটা পর্যন্ত নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে।

পীর সাহেবের নির্দেশেই তালেবে এলেম রাজাকার এবং হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের একমাত্র পেয়ারা সরবরাহকারী হিন্দু অধ্যুষিত অঞ্চল আটঘর, কুড়িয়ানা ও ধলারে পাঁচ দিক থেকে একযোগে হামলা চালিয়ে হাজার হাজার পুরুষ, মহিলা, শিশুকে হত্যা করে এবং তাদের সর্বস্ব লুট করে। সেখানে বাড়ি-ঘরের তেমন চিহ্ন নেই। মাদ্রাসার ছাত্র রাজাকার সেখানে লোহার রড, লাঠির সাহায্যে হত্যা করা ছাড়াও জঙ্গল ও ধান ক্ষেতে লুকিয়ে থাকা অসংখ্য মহিলার উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। তারা প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক ধরে এনে বেয়নেট চার্জ ও গুলি করে হত্যা করতো। গত রোজার শেষের দিকে পীর সাহেবের নির্দেশক্রমেই হানাদার বাহিনী ৬ দিক থেকে হামলা চালিয়ে স্বরূপকাঠির শিল্প শহর ও বন্দর ইন্দরহাট পুড়িয়ে দেয়। এবং প্রায় এক হাজার নিরীহ লোককে হত্যা করে। তবে মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধে এখানে ২২ জন হানাদার সৈন্য ও শর্ষিণার রাজাকার নিহত হয়। এখানকার স্থানীয় তরুণদের মধ্যে শতকরা ৯০ জনই ছিল মুক্তিবাহিনী ও মাদ্রাসার কয়েকজন স্থানীয় ছাত্রও মুক্তিবাহিনীতে সদস্য ছিল। গত নয় মাস কাল শর্ষিণার পীরের বাড়ি ছিল হানাদার বাহিনীর একটি দুর্ভেদ্য দুর্গ। এখানে পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্য ও পাঞ্জাবী পুলিশ অবস্থান করে বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালায় এবং রাজাকার ট্রেনিং দান করে। মুক্তিবাহিনীর আক্রমণের জন্যে পরে এখানে স্বরূপকাঠি থানা স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে শর্ষিণার রাজাকার এবং দালালরা মুক্তিবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তবে পীর সাহেবের অনেক সাঙ্গপাঙ্গ ঢাকা, বরিশালে ও অন্যান্য শহরে আত্মগোপন করে আছে।পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের আমল থেকে শর্ষিণা গণ-বিরোধী চক্রের একটি শক্তিশালী আখড়া ছিল।” সাংবাদিক শহীদুজ্জামান জোয়ারদারের ফেইচবুক থেকে সংগৃহীত

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT