1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
কেমন আছি আমরা? - মুক্তকথা
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১৪ পূর্বাহ্ন

কেমন আছি আমরা?

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬
  • ৩৯০ পড়া হয়েছে

ফেডারেল ব্যাংকে রক্ষিত আমাদের জাতীয় ব্যাংকের আমানত থেকে টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে দূর্বৃত্বরা। জাতীয় ব্যাংকের টাকা মানেই দেশের টাকা। জাতীয় ব্যাংক একটি দেশের অন্তরাত্মা। সবচেয়ে নিরাপদ স্থান। সেখান থেকেই টাকা চুরি। অতএব বলতেই হয়, আমরা ভাল নই। অবশ্য ভাল ছিলামইবা কখন? । যুগে যুগে আমরা লুন্ঠিত হয়েছি। সাধারণ মানুষ যখনই একটু মাথা তুলেছে দাঁড়াবার জন্য, বাঁধা এসেছে দুদিক থেকেই। দেশীয় আর বহিরাগত। আশ্চর্য্যের ব্যাপার আজ অবদি সেই সমানতালেই চলছে লুন্ঠন। এ পর্যন্ত সংগঠিত সকল অর্থ কেলেঙ্কারীর সাথে দেশী-বিদেশী দুই জড়িত। এ যেন লু্ন্ঠনে হরিহর আত্মা! স্বাধীনতা পরবর্তী রিলিফের কম্বল চুরি থেকে শুরু করে ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর অর্থ কেলেঙ্কারী এবং শেষ পর্যন্ত রিজার্ভ ব্যাংকের অর্থ চুরি সবক’টাতেই দেশী-বিদেশী আঁতাত সুপ্রচ্ছন্ন।

কেনো এমন হচ্ছে? কারা এই চোরের দল?? কেনো এরা ধরা পড়ছে না??? আর ধরা পড়লেও কেনো বিচার হয়না???? এ জন্য ব্যক্তি দায়ী না ব্যবস্থা? আর কবে দেশের মানুষ স্বচক্ষে এদের বিচার দেখে আশ্বস্ত হতে পারবে। এসব প্রশ্নই ঘুর পাঁক খায়, কোন উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না। অথচ কৃষক, শ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ আর প্রবাসে বিদেশ বিভূঁইয়ে থাকা লক্ষ লক্ষ প্রবাসী সবাই খাটছে। স্ফীত হয়ে উঠেছে জাতীয় ধনভান্ডার। কিন্তু উঠলে কিহবে? রপ্তানী বাড়ছে না বাড়ছে আমদানী। হাঁক ডাক জোড়ে সুরে থাকলেও বিনিয়োগ বাড়ছে না। বরং বিদেশীরা দেশীয় উতপাদনে ঢুকে পড়ছে। আমাদের বাজার চলে যাচ্ছে বিদেশীদের নিয়ন্ত্রণে। পুড়ো বাজার ব্যবস্থাই বিদেশীদের দখলে চলে যাবে এমন অবস্থা এখন। আর যাবে না, আমাদের কোন ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠলেতো আর বিদেশীরা সুযোগ পেত না। আমাদের মোবাইল ফোনের বাজার এখন পুরো বিদেশীদের হাতে। আমাদের অবস্থান পৌরসভার ট্যাক্স কালেক্টরের মত। একমাত্র কাপড় শিল্প আর প্রবাসীদের আয় রোজগারে স্ফীত হয়ে উঠছে আমাদের দেশী ও বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার। কিন্তু সবকিছুই গুটিকয়েক দেশী-বিদেশী ব্যবসায়ীদের মুনাফা হয়ে কুক্ষিগত হচ্ছে। কারণ আমরা মৌলিক কোনকিছুই গড়ে তুলতে পারিনি। সেই ইংরেজ থেকে পাকিস্তান যা পেয়েছিল সবকিছুই তার রয়ে গেছে, শুধু জমির নামটি বদল হয়েছে। পাকিস্তান স্বরাজ চেয়েছিল তা পেয়েছে কিন্তু আমরাতো শুধু স্বরাজ চাইনি। আমরা চেয়েছিলাম স্বাধীনতার সাথে মুক্তিও। আমাদের নেতাতো স্বাধীনতার সাথে সাথে মুক্তির কথাও বলেছিলেন। কিন্তু মুক্তি যেনো এখন ধরাছোয়ার বাইরে চলে গেছে।

ধনবানরা লুন্ঠন আর পাচার সমানতালে করছে। ব্যাংকে টাকা আছে কিন্তু নিরাপদ নয়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আয়ত্বে এসেছে কিন্তু নিয়ন্ত্রণে নয়। দেশী-বিদেশী লুটেরারা অন্য ব্যাংককে তো আগেই হাতিয়েছে এখন জাতীয় ব্যাংকেও হাতিয়ে নেয়ার সাহস দেখিয়েছে। ব্যবহার করেছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এটি সিঁদ কাটা না ডাকাতি!
রাষ্ট্র পরিচালনায় ধনবানরা আগেও ছিল এখন তাদের পরিমান এমনই যে বাকীদের আর দেখা যায়না। সমানতালে ঘরে-বাজারে সস্তায় গতর খাটার মানুষের ভীড়ে বাবুদের দামী গাড়ী দেখলেই চিনা যায়। শ্রম এতো সস্তা আগে কখনও দেখিনি। সস্তা শ্রমপ্রাপ্তিতে ধনবানদের লাভই যে বেশী। সস্তা শ্রম বিদেশে পাঠালে মুনাফা আরো বেশী। রাজনীতির ভাষায় পুঁজিতন্ত্রের বিকাশ ঘটেছে। তা’হলে বৈপ্লবিক উতপাদন কোথায়? পুঁজিবাদতো উতপাদন বাড়ায়। বরং দেখি, ব্যক্তিগতকরণ নৈরাজ্যিকভাবে বেড়েই চলেছে, বাড়ছে শ্রেণী বৈষম্যও। পাবলিকের হাত থেকে ধীরে ধীরে সবকিছুই চলে যাচ্ছে প্রাইভেটের হাতে। শিক্ষা এখন বাণিজ্য। স্বাস্থ্যও হতে চলেছে। ঘুষের এখন গণায়ন হয়েছে আর গুম বেড়েই চলেছে। বাঁচা-মরা এখন অর্থ নির্ভর। সমাজে মানুষে বিচ্ছিন্নতার চিত্র ভয়ঙ্কর। আগে ভাইয়ে ভাইয়ে খুনাখুনি শুনা যেতো এখন পুত্র পিতাকে আর ভয়ঙ্কর হলো, মা সন্তানকে ঠান্ডা মাথায় খুন করে। তা’হলে এ কোন পুঁজিবাদ?

পাকিস্তান আমলে, পুঁজিবাদ-পুঁজিবাদের বিকাশ এসব কথা শুনতাম। কিন্তু বাস্তবে মানবজীবনে এ শব্দগুলোর আচরণ পরিচয় কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। কারণ তখনও আমাদের মধ্যে এসব অশুভ শক্তি গড়ে উঠতে পারেনি। এখন উঠেছে তাই তার ভয়াবহতা নিষ্ঠুরভাবে চোখের সামনে প্রতিয়মান হচ্ছে। হাঁড়ে হাঁড়ে বুঝতে পারছি পুঁজিতন্ত্রের বিকাশ বলতে কি বুঝায়! মা এখন সন্তানকে খুন করতে ভাল পায়!

জনসংখ্যা বাড়ছে, কর্মসংস্থান আনুপাতিকহারে মোটেই হচ্ছে না। অবস্থায় মনে হয়, ক্ষমতার দূর্বল পক্ষ খুবই চেষ্টা করছে কর্মসংস্থান বাড়ানোর। মাঝে মধ্যে আওয়াজ শুনি।

প্রকৃতি বদলাচ্ছে। উষ্ণতা, প্লাবন, দূষণ বাড়ছে। মরা নদী সর্বত্র। বনভূমি উজাড় এখন আর গাছ কেটে নয়, পুরু মাটিসহ পাহাড় কেটেই হচ্ছে। রাষ্ট্র চায় কয়লাচালিত বিদ্যুত কারখানা নির্মাণ করতে বিপরীতে সংখ্যায় অত্যল্প হলেও মানুষের তীব্র আন্দোলন দেখতে পাই দুনিয়ার একমাত্র মেনগ্রুব জঙ্গল সুন্দর বন রক্ষার নামে।

ক্ষুদ্র হলেও এক পক্ষ মানুষের মধ্যে হতাশা। কারণ এতোদিন আশা ছিল বদলাবে, একটা কিছু হবে। মানুষের আশা ছিল কেউ না কেউ এগিয়ে আসবে এবং পারবে। মানুষ বর্তমানের উপর ভরসা করেছিল, বিশ্বাস করেছিল ওরা করবে কিন্তু করছে না বরং লোপাট হচ্ছে নির্বিঘ্নে।

শিক্ষা, শিক্ষিত সমাজ দেশকে গড়ে তুলে। আমাদেরও আশা ছিল হবে। কিন্তু আমাদের শিক্ষা সে পথ দেখাতে পারছে না। বরং মানুষে মানুষে বিভাজনকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। বিভাজন আগেও ছিল কিন্তু থাকবেনা, নিঃশ্বেষ হবে আশা ছিল। কিন্তু হয়নি বরং ইংরেজী আর আরবী ভাষার খপ্পড় থেকে বেড়িয়ে আসার রাস্তা দেখাতে পারেনি আমাদের শিক্ষাপদ্ধতি। আর মাতৃভাষায় অভিন্ন শিক্ষাপদ্ধতি এখন কল্পনার বাইরে।
হতাশা তাই বাড়ছে। হতাশা মানুষকে অনেক সময় বিপথগামী করে। অতএব, বসে থাকলে চলবে না, কারণ খুঁজতে হবে এই হতাশার।
–হারুনূর রশীদ/১৭মার্চ ২০১৬

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT