1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
করোনার চেয়ে ভয়াবহ - মুক্তকথা
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২৪ পূর্বাহ্ন

করোনার চেয়ে ভয়াবহ

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০
  • ৭২৯ পড়া হয়েছে

জহিরুল চৌধুরী

করোনার চেয়ে ভয়াবহ গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন বিপর্যস্ত। মার্চ মাসের শুরুতে ঢাকার গুলশানে ছিলাম। দু’টো মোবাইল ফোন মেরামত করতে দিলে মেকানিক বললো- মেরামত খরচ দ্বিগুনেরও বেশি। কারন বাজারে যন্ত্রাংশের সঙ্কট। ছেলেটি আজ কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ কিনতে চাইল অনলাইনে। ১৪৪ ডলারের মনিটর হয়ে গেছে ৩০০ ডলার।
আপাতত করোনা মানুষকে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছে। করোনার কারনে মানুষ ঘরবন্দীও। সপ্তাহ দুই আগে অফুরন্ত অবসরে লুডু খেলার শখ হলো। অনলাইনেও খেলা যায়। কিন্তু একটি বোর্ড থাকলে মন্দ হয় না। বাচ্চাকাচ্চা নিয়েও খেলা যায়। যখন অনলাইনে লুডু বোর্ড কিনতে গেলাম, যুক্তরাজ্য থেকে সেই বোর্ড এসে পৌঁছবে জুলাই মাসের শুরুতে। ততদিনে হয়ত করোনাও বিদায় নেবে!
মহামারীর মতো বিপদে আমরা ঘাবড়াই। বিচলিত হই। মানুষের মৃত্যু হয় চোখের সামনে। কিন্তু বিশ্ব সভ্যতার নেতৃত্বের আসনের দেশগুলো যখন মানুষ হত্যার বিপজ্জনক ব্যবসা বছরের পর বছর ধরে নির্ধিদ্বায় চালিয়ে যায়, তখন আমরা বিচলিত হই না। আর এই ব্যবসার ক্রেতা দেশগুলো যখন ধর্ম ব্যবসায় নিজেদের নেতৃত্বের আসনে প্রতিষ্ঠিত করে, তখনও আমরা প্রশ্ন করি না!
মুসলমানরা হলো প্রশ্নবিমুখ জাতি। সবকিছুতেই তাদের ভয়। বিপুল অর্থ বিত্তের মালিক হলেও মুসলমানের ঘরে তাই শান্তি নাই। অস্ত্র গোলাবারুদ মজুদ করে, মানুষ হত্যার আয়োজন করে কি কেউ শান্তি পেতে পারে? খবরটি তাই প্রচার করেছে যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকা।

মোড়ল দেশগুলোর টাকার টান পড়লেই শরণাপন্ন হয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অস্ত্র বিক্রির ঝুলি নিয়ে! যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত গার্ডিয়ান পত্রিকা আজ সে তথ্যই দিল।
যুক্তরাজ্য ২০১৯ সালে সৌদিআরব, ওমান, কাতার, আরব আমিরাতে ১.৩ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও গোলাবারুদ রফতানি করেছে। এবং এই বৃদ্ধির পরিমান আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি। সেই বছর উল্লেখিত দেশগুলোতে যুক্তরাজ্যের অস্ত্র রফতানির পরিমান ছিল ১৭৩ মিলিয়ন ডলার।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ফ্রিডম হাউজ, যারা দেশগুলোর রাজনৈতিক এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি যাচাই করে, তারা বলছে- এই অস্ত্র-গোলাবারুদের পুরোটাই ব্যয় হয়েছে এবং হবে ইয়েমেনে মানুষ হত্যায়। দুর্ভাগ্যবশত বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোতে এ নিয়ে মাথাব্যাথা নেই মোটেও। আর যে দেশগুলো এই অস্ত্র ও গোলাবারুদ কিনেছে, সে সব দেশেও গণতন্ত্র নেই। নেই মানুষের বাক স্বাধীনতাও।
মধ্যপ্রাচ্যের তথাকথিত মুসলিম দেশগুলো মানুষ হত্যা করছে দুই ভাবে। এক. অঘোষিত যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে। দুই. বাতাসে সীসা ছড়িয়ে দিয়ে। যে জ্বালানী তেল তারা সারাবিশ্বে প্রতিবছর বিক্রি করছে, তাতে আমাদের এই সবুজ বিশ্ব তামাটে হতে আর বেশি বাকি নেই।
উন্নত, অনুন্নত সবগুলো দেশ জীবাস্ম জ্বালানী কেনার জন্য মরিয়া! আজকের দিনে ক্যান্সারসহ মারাত্মক রোগবালাই বিস্তৃতির একটা প্রধান কারন- পরিবেশের দ্রুত বিপর্যয়! আর এই পরিবেশ বিপর্যয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে পেট্রোল, ডিজেল, কয়লার মত জীবাস্ম জ্বালানী।
ইরাক-ইরান যুদ্ধ কিংবা ইরাক, আফগান, লিবিয়া, সিরিয়া যুদ্ধের কথা বাদ দিলাম। খোদ ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে এ যাবত ১২,০০০ এরও বেশি বেসামরিক মানুষসহ এক লক্ষেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
পাশাপাশি যুদ্ধের কারণে চলমান দুর্ভিক্ষের ফলে ৮৫,০০০ এরও বেশি লোক মারা গেছে। বিশ্বে কি খাদ্য ঘাটতি চলছে? না কি দূর্দশাগ্রস্ত সেই মানুষগুলোকে ইচ্ছে করে মৃত্যুর দুয়ারে ঠেলে দেয়া হয়েছে? যাতে যুদ্ধের ভয়াবহতা বাড়ে! কারণ মানুষ যত ক্ষুধার্ত হবে, ততই যুদ্ধোন্মুখ হবে!
কোথাও অভ্যন্তরীন বিবাদ বা গৃহযুদ্ধ দেখা দিলে বৃহৎ শক্তিগুলো সেটা থামাতে চায় না। বরং তাবেদার আঞ্চলিক শক্তিকে ব্যবহার করে চায় অস্ত্র ও গোলাবারুদের বিক্রি। ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, সর্বত্র একই চেনা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে!
খুব শিগগির হয়তো করোনার ভয়াবহতা থামবে। কিন্তু যুদ্ধ ও গোলাবারুদের ব্যবসা অর্থাৎ মানুষ হত্যার আয়োজন থামবে বলে মনে হয় না। এবং এই ব্যবসা করে যাবে আজকের করোনা আক্রান্ত সবচেয়ে শক্তিধর দেশগুলোই। কেউ হয়ত বলবেন প্রকৃতির অভিশাপ। কিন্তু অভিশাপ বলে পাশ কাটিয়ে যাবার সুযোগ নেই।
দরকার মানুষকে সচেতন হয়ে ওঠার। নিজেকে মুসলমান দাবি করলে, বিশ্ব নাগরিক বলে দাবি করলে পারস্পরিক এই সংহারের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াতে হবে। বিশ্বের সর্বত্র মানুষ যুদ্ধ ও পরিবেশের ভয়াবহতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে। এই সোচ্চার হওয়াটাকে কেবল উন্নত বিশ্বের কাজ হিসেবে গণ্য করলে চলবে না।
পরিশেষে আলবেয়ার কামুর বিখ্যাত “দ্যা প্লেগ” উপন্যাসের শেষ স্তবকটি জুড়ে দেব। নোবেল জয়ী এই আলজেরীয় উপন্যাসিক একজন ডাক্তারের অভিব্যক্তি বর্ণনা করছিলেন তার ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত দ্যা প্লেগ উপন্যাসে।
“শহর থেকে প্রবাহিত উল্লাসের শব্দ শুনতে শুনতে ডাক্তার উপলব্ধি করলেন যে, এই উল্লাস সব সময় আসন্ন বিপদের আশংকায় বিধ্বস্ত। কারণ এই উল্লসিত জনতা যে সত্য জানে না, তা তিনি নিজে জানেন। তিনি বই পড়ে জেনেছেন যে মৃত্যুবাহী রোগের বীজ কোনোদিন মরে না। কোনোদিন একেবারে অন্তর্হিতও হয় না।
যুগ যুগ ধরে এই বীজ সুপ্ত অবস্থায় আসবাবপত্র আর বিছানার মধ্যে লুকিয়ে থাকে। তারা অসীম ধৈর্য নিয়ে মানুষের ঘরে, বাক্সপেট্রা আর তোরঙ্গের মধ্যে রুমালে, বইয়ের আলমারীর তাকে তাকে অপেক্ষা করে। হয়তো আবার এমন দিন আসবে, যখন দুর্ভাগা মানুষকে শিক্ষা দিতে এই মারী আবার ঘুম থেকে জেগে উঠবে।”
(indeed, as he hstened to the cries of joy rising from the town, Rieux remembered -that such joy is always im-periled. He knew what those jubilant crowds did not know but could have learned from books: that the plague bacillus never dies or disappears for good; that it can lie dormant for years and years in furniture and linen-chests; that it bides its time in bedrooms, cellars, trunks, and bookshelves; and that perhaps the day would come when, for the bane and the enlightening of men, it would rouse up its rats again and send them forth to die in a happy city. )
Zahirul Chowdhury
25 April at 21:08 ·
নিউইয়র্ক, ২৫শে এপ্রিল ২০২০

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT