1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
মুক্তিযুদ্ধের শেষ নেই, মুক্তির সংগ্রাম নিরন্তর - মুক্তকথা
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৯ অপরাহ্ন

মুক্তিযুদ্ধের শেষ নেই, মুক্তির সংগ্রাম নিরন্তর

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ২৮৮ পড়া হয়েছে

মুক্তকথা সংগ্রহ॥

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের অন্তরে গেঁথে দিন মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস-চেতনা
নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানার-বুঝার ও মূল্যায়ন করার সুযোগ করে দেন

-মোতাহার হোসেন

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মেধা-সংস্কৃতি বিকাশ পরিষদের আমন্ত্রণে সংস্থার কার্যালয়ে এসেছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের জীবন্ত কিংবদন্তি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন। প্রথমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান রাজনগরের তিন জন বীর মুক্তিযুদ্ধাকে(রাম লাল রাজভর, সজল কুমার চক্রবর্তী এবং মোঃ আমির হোসেন) সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয় এবং উপস্থিত সকলকে পরিষদের পক্ষ থেকে মিষ্টিমুখ করানো হয়।
বিজয় মজুমদারের শিশু স্নেহাদ্রী মজুমদারের মুখে-মিষ্টি দিয়ে বিজয় দিবসের মিষ্টি-আনন্দের উদ্ভোধন করেন সংস্থার সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ ইকবাল। এসময়ে নবীন-তরুন ও প্রবীণ প্রজন্মের মধ্যে অধ্যক্ষ(অবঃ) জিলাল উদ্দিন, শিক্ষক(অবঃ) ধীরাজ ভট্টাচার্য, অধ্যাপক শাহানারা রুবি, অধ্যাপক তোফায়েল আহমদ, পুজা পরিষদের সভাপতি কেতকী রঞ্জন ভট্টাচার্য্য, কৃষক লীগ সভাপতি মাহমুদুর রহমান, প্রেসক্লাব সভাপতি আউয়াল কালাম বেগ, সদর ইউনিয়নের সদস্য মোঃ ছয়ফুল আলম, স্বাস্থ্য প্রযুক্তিবিদ খছরু চৌধুরী, শিক্ষক নেতা রেজওয়ানুল হক পিপুল, রাজনগর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্র লীগের সম্পাদক রিয়াজ খান ও তার সহপাঠী নতুন প্রজন্মের বেশ কয়েকজন ছাত্র-সহ পরিষদের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সংস্থার এই ক্ষুদ্র মহতি আয়োজন মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেনের যুদ্ধ-সময়ের বাস্তব গল্প গাঁথায়, অনেক অজানা তথ্যের সন্নিবেশে এতটাই প্রাণবন্ত হয়ে উঠে যে, উপস্থিত শ্রোতাদের মধ্য থেকে দাবি উঠে আসে আগামী ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে এই কিংবদন্তি মুক্তি- যুদ্ধার জবানিতে “রাজনগর-মৌলভীবাজার” এলাকার জনগণের যুদ্ধকালীন ইতিহাস শুনানোর আয়োজন করতে হবে মেধা-সংস্কৃতি বিকাশ পরিষদকে।
মোতাহার হোসেন বলেন, “১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন করার পর আমাকে ১৯৭২ এর ২৫ মার্চ রাতে গ্রেপ্তার করে মৌলভীবাজার জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তৎকালীন মৌলভীবাজার মহকুমার এসডিও সাহেব আমাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশের কথা জানালে, আমি উনার কাছে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চেয়েছিলাম। উনি সঠিকভাবে কিছু ব্যাখ্যা দিতে না পারলেও আমি বুঝতে পারছিলাম, কেন আমি ও অনেক মুক্তিযোদ্ধা গ্রেফতার হচ্ছি। এমনও দেখা গেছে, অনেক রাজাকার দুমুঠো ভাতের জন্যে অথবা যুদ্ধে অংশ গ্রহণের কোন গাইড-লাইন না পেয়ে রাজাকারের তালিকায় নাম লিখিয়েছে এবং এদের সবাই সমান অপরাধীও ছিল না। এমনকি, কোনো কোনো রাজাকার – মুক্তিযুদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সহায়ক এজেন্ট হিসেবেও কাজ করেছে। এরকমই একজন রাজাকার ছিলেন মৌলভীবাজারের প্রয়াত সাংসদের আত্মীয় এবং তার কাজই ছিল মুক্তিযুদ্ধাদের অবাধ চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া। ভারতে যাতায়াতের রাস্তা নিরাপদ রাখা। আবার এমনও দেখা গেছে যে, ছেলে আওয়ামী লীগ এর ইউনিয়ন কমিটির সম্পাদক কিন্তু পিতা ও অন্য ভাইরা হিন্দু বাড়ির টিন খুলে নিচ্ছেন, হিন্দু পরিবারের সহায়-সম্পদ সোনা-দানা লুট করেছেন। আবার যুদ্ধকালীন অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তালিকাভুক্ত রাজাকার না-হয়েও পুরো যুদ্ধকালীন সময়ে এই রাজনগরের একটি ইউনিয়নের এলাকায় একজন ব্যক্তি লুটতরাজ কায়েম করেছিল। এই সকল অপরাধ ও অপরাধীদের একটা তথ্য ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধাদের হাতে। আমরা যুদ্ধকালীন অপরাধী- রাজাকারদের অপরাধের ধরণ অনুযায়ী – কার কি শাস্তি হওয়া উচিত – তার একটা মার্কিং করে রেখেছিলাম।”
“কামারচাক ইউনিয়নের অপরাধী রাজাকারদের তালিকার ১ নম্বরে আমি আমার নিজের খালাতো ভাইয়ের নাম লিখিয়েছি। সে স্বাধীনতা পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধাদের হাতে নিহত হয়েছে। দেশ- বিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী সে যে-ই হোক তার কোনো ক্ষমা ছিলো না আমার কাছে। আমার সাথের মুক্তিযুদ্ধাদের উপর এই বিষয়ে আমার একটা নির্দেশনাও জারি ছিল। আমরা অনেক মুক্তিযোদ্ধারা সেই অনুযায়ী কাজ করছিলাম। অনেক নেতাদের বাড়ি-ঘরে লুকিয়ে থাকা, আত্মগোপনে থাকা রাজাকার অপরাধীদের পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছি এবং স্থানীয় জনগণের মতামতের ভিত্তিতে শাস্তিদানও করছি – এই বিষয়গুলো তাদের পছন্দ ছিলনা ব’লেই হয়তো আমাকে/আমাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে, এক সরকারী আদেশে গ্রেফতারকৃত সবাই মুক্তি পেয়েছি।”
“মজার ঘটনাটি হলো, এসময়ে অপরাধী রাজাকারদের দ্বারাও জেল ভর্তি ছিল। এসকল রাজাকাররা আমাকে জেলে দেখে তারা নিজেরা- নিজেরা কানাঘুষা করে বলাবলি করছিল যে, আমাকে জেলে আনা হয়েছে নাকি সরকারের লোক/এজেন্ট হিসেবে? যাতে ওরা কোনো ষড়যন্ত্র করতে না পারে …!” এই রাজ নগরেই ১৯৭১’র ডিসেম্বরে জনতার গণ-আদালতের রায়ে মৃত্যুদন্ডের শাস্তি পেয়ে নিহত হওয়া রাজাকারের কবরের পরিচিতিতে শহীদ (….অমুক মিয়া) লিখে রাখতে দেখেছি।”

সংক্ষেপে এই হলো রাজনগরের যুদ্ধকালীন সময় এবং পরবর্তী সময়ের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস। আমরা আগামীতে – আসছে স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধা রাজনীতিবিদ শ্রদ্ধেয় মোতাহার হোসেনের কাছ থেকে – উনার ডায়েরির লিখে রাখা পাতা থেকে আরও অনেক-অনেক বাস্তব ঘটনার কথা শুনব, নতুন প্রজন্মকে শোনাব! মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-চেতনা নিয়ে যাব প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। সমাজকে বলতে চাই – মুক্তিযুদ্ধের শেষ নেই, – মুক্তি যুদ্ধ চলছে এবং চলবে…। মুক্তির সংগ্রাম নিরন্তর।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT