1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
আমার মুক্তিযুদ্ধ - মুক্তকথা
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন

আমার মুক্তিযুদ্ধ

হারুনূর রশীদ॥
  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ১১ মে, ২০২১
  • ৮০৭ পড়া হয়েছে

-হারুনূর রশীদ

দিনটি ছিল ১৯৭১এর ১৪ আগষ্ট।
সময় তখন রাতের মধ্যভাগ। রাতের অন্ধকার ভেদ করে শো শো শব্দে বাড়ী-ঘর, পাহাড়-জঙ্গল মাঠ-ঘাট পেরিয়ে তিনটি গাড়ীর এক সামরিক কনভয় চলছে। অন্ধকার ট্রাকের ভেতরে যাত্রী সকলেই নিশ্চুপ। সবাই মাথায় হাত দিয়ে বসে কি যেনো এক দূর্দমনীয় স্বপ্নে বিভোর হয়ে কি সব ভাবছে। কারো মুখে কোন কথা নেই। এমনিতেই রাঁতের আঁধারে বাইরের কোন কিছুই স্পষ্ট করে দেখা যাচ্ছিল না। তার উপর ভেতরে বসা মানুষগুলোর পিনপতন নীরবতা অবস্থাকে কেমন ভীতিময় করে রেখেছে। কনভয়ের চলা আরো দ্রুত হয়ে উঠেছে। 
তারা সকলেই অন্য দেশের তারপরও এ দেশের সাথে রয়েছে তাদের নারীর এক নির্মল টান। মিল আছে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতিতে।

তাদের আপাততঃ গন্তব্য একটি সীমান্ত চৌকি। ওখানে পৌঁছে সীমান্ত পার হয়ে প্রয়োজনে শত্রু চৌকিতে চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে দেশের আরো ভেতরে ঢুকে যাওয়া। তারপর স্থায়ীভাবে দেশের ভেতরে চলাফেরার ব্যবস্থা করে নেয়া। যে ভাবেই হোক আজ রাঁতের মধ্যেই এ কাজে বিজয় আনতে হবে, এমন ভাবনায় নীরব বোবা সময় কাটাচ্ছেন সকলে। দীপ্ত তাদের চেহারায় ফুটে উঠা প্রতিশোধ আর বিজয় অর্জনের উজ্জ্বলতা আলো-অন্ধকারের ঝিলিকে ঝিলিকে ফুটে উঠছে। কোন বাধাই যেনো তাদের সামনে কিছুই নয়। মানুষের যৌবন মনে হয় এমনি দুরন্ত হয়।



একজন ট্রাকের ছিদ্র জানালা দিয়ে বাইরে কিছু একটা দেখার চেষ্টা করছিলো। এমনিতে সকলেই অন্যদেশের তার উপর রাত। বাইরের দৃশ্য কোন কিছুই উপভোগের উপায় নেই। দেশের ভেতরে ঢুকার আগে তাদের অনেক কিছুই দেখে-বুঝে নিতে হবে। রাতের আঁধারেই তাদের দেশের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া হবে। রাঁতের সময়টাই সামরিক দিক থেকে খুবই উত্তম এসব কাজের জন্য। ছোট ছোট গ্রাম শহর পার হয়ে রাতের বুক চিরে ওরা চলছে একদল চোরাগুপ্তা যুদ্ধা।



দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সামরিক কনভয়টি সীমান্তবর্তী একটি জঙ্গলাকীর্ণ স্থানে এসে থামলো। ঝোপ-ঝাড়ের মত অগভীর জঙ্গলের কিছুটা দূরে সুউচ্চ গাছ-গাছালি আবছা আবছা দেখা যায়। দূরে কিছু বাড়ী-ঘরের বাতির আলো টিম টিম করে জ্বলছে তখনও। তখনও ট্রাকের ভেতরের ১৩জনের কেউই জানতে পারেনি এটি কোন সীমান্ত এলাকা। কারণ ট্রাকের ভেতরে বসে থাকা সকলেই ভিনদেশী। কেউই এদেশের নয়। সুতরাং জানবে কি করে? তারা এখানে এসেছিলো যুদ্ধের প্রশিক্ষন নিতে। প্রশিক্ষন শেষ এবার তাদের দেশের ভেতরে প্রবেশ করতে হবে। আর সে কারণেই তাদের এখানে নিয়ে আসা।

একটি বিরাটকায় গাছের নিচে তাদের বসে থাকতে নির্দেশ দেয়া হলো। বলা হলো আত্মগোপনের মত নীরব নিঃশব্দে বসে থাকতে। ঠিক সময়মতো তোমাদের বলা হবে। আমরা ১৩জন রাতের আঁধারে একটি বিশাল গাছের নিচে বসে আছি সময়ের অপেক্ষায়। পরে এসে আরো দু’জন যোগ হলেন।

সে পঞ্চাশ বছর আগের কাহিনী। আমরা সকলেই তখন কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা দিয়েছি। আমি সেসময় মহাবিদ্যালয়ের শেষ পাঠ স্নাতক পাশ করে নিয়েছি। বাকীদের প্রায় সকলেই উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে মহাবিদ্যালয়ে দ্বাদশ-ত্রয়োদশ বর্ষে অধ্যয়ন করছেন। 

যাত্রী আমরা ১৩জন। একটি সামরিক ট্রাকে চড়ে রওয়ানা দিয়েছি। গন্তব্য নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়া।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT