1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
ফানাই নদী খনন ১৭ কোটির অর্ধেকই গেছে জলে - মুক্তকথা
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন

ফানাই নদী খনন ১৭ কোটির অর্ধেকই গেছে জলে

হোসাইন আহমদ॥
  • প্রকাশকাল : রবিবার, ৬ জুন, ২০২১
  • ৪৩৪ পড়া হয়েছে

হাওরের জলাবদ্ধতা নিরসন করে হাওর পারের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরের ফানাই নদী খননে বরাদ্দ হয় ১৭ কোটি টাকা। এই বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেকই গেছে জলে। অভিযোগ রয়েছে কার্যাদেশ (ওয়ার্ক ওয়ার্ডার) অনুযায়ী কোথাও কাজ হয়নি। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাওর পারের কয়েক লক্ষ মানুষ।
সাধারণ মানুষ তাদের ভোগান্তি নিরসনের জন্য একাধিকবার প্রতিবাদ করলেও আমলে নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সচেতন মহল বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঠিক তদারকির অভাব ও কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নামকাওয়াস্তে কাজ করে বিল উত্তোলনের পায়তারা করছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ না হলে উপকারের পরিবর্তে কৃষকদের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাবে এমন আতংকে রয়েছেন হাওর তীরবর্তী বাসিন্দারা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মৌভলীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ফানাই নদী খনন প্রকল্পের কাজ হাতে নেয় মন্ত্রণালয়। ৪০ কিলোমিটার খননে প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে(ভাটি অংশ) হাকালুকি হাওরের চকিয়া বিল থেকে ব্রাক্ষণবাজার ইউনিয়নের কাকিচার গ্রাম পর্যন্ত সাড়ে ২৩ কিলোমিটার খনন ও নদীর দুই পাশ ড্রেজিং করে জলজ বৃক্ষ রোপনে বরাদ্দ দেয়া হয় ৭ কোটি ৭৪ লক্ষ ১৯ হাজার ১৬ টাকা। কাজ পায় ঢাকার মেসার্স মা-বাবা কন্সট্রাকশন ও শরিফ এন্ড সন্স ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। উজান অংশে ব্রাক্ষণবাজার ইউনিয়নের কাকিচার হতে কর্মধা ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা মহিষমারা পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটারে বরাদ্দ দেয়া হয় ৯ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা। কাজ পায় এসএএসআই এন্ড ইশতাত এন্টারপ্রাইজ ও জুয়েল ব্যান্সার নভপস ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
জানা যায়, ২০১৯ সালে কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের মার্চে ভাটি অংশের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। তবে কাজ শেষ হয়েছে ৭০/৭৫ ভাগ। ইতি মধ্যে ৫০ শতাংশ টাকা উত্তোলন করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এদিকে উজান অংশের কাজের মেয়াদ আগামী নভেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। তবে ইতিমধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৬০/৬৫ ভাগ। ৪০ শতাংশ টাকা উত্তোলন করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

খননের পর নদীপাড় ভেঙ্গে মাটি আবারও নদীতেই। ছবি: সংগৃহীত

সরেজমিন হাকালুকি হাওরে গেলে দেখা যায়, হাওরের দুগাঙ্গা পয়েন্ট (চালিয়া) থেকে ফানাই নদীর নিচের অংশের খনন কাজ নামকাওয়াস্তে করা হয়েছে। মাটি খননের যন্ত্র ধারা নদীর দুই পাশ থেকে কিছু মাটি উত্তোলন করে পারে এলোপাতারি ভাবে ফেলে রাখা হয়। এতে কৃষক, মৎসজীবি, রাখাল ও পর্যটক সহ সর্বস্থরের মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ পুহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে বিগত বোরো মৌসুমে ধান বাড়ীতে আনতে কৃষকদের দূর্ভোগের শেষ ছিলনা। আবার কারো কারো ফসলি জমিতে মাটি ফেলে রাখা হয়েছে। এদিকে পুরো নদী খনন না করায় নৌকা চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও দেখা গেছে নদীর অনেক অংশ খননই করা হয়নি।
ভাটি অংশে ৯ হাজার ৪’শ জলজ বৃক্ষ রোপনের কথা থাকলেও সরজমিনে একটি গাছও দেখা যায়নি। দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী সরওয়ার আলম বলছেন, ২ হাজার ২’শ গাছ লাগানো হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একই অবস্থা ফানাই নদীর জাব্দা, ছিলারকান্দি, ছকাপন, কাদিপুর, চুনঘর ও খাকিচার অংশে।
ভুকশিমইল ইউনিয়নের শিক্ষানবীশ আইনজীবি রিয়াজুর রহমান বলেন, নদীর দুই পাশে মাটি স্তুপ করে এলোমেলো ভাবে রাখা হয়েছে। ফলে মাটি ফের নদীতে এবং পার্শ্ববর্তী ফসলি জমিতে পড়ে যাচ্ছে। এতে করে সাধারণ কৃষকরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। আবার এলোমেলো করে মাটি রাখায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পুহাতে হয়। তিনি আরও বলেন, নদী পারের কোথায়ও পানি নিষ্কাষনের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। যার কারণে চাষাবাদের মৌসুমে জলাবদ্ধতা লেগেই থাকে। কাজের গাফলতির কারণে এতো টাকা খরচ করেও প্রধানমন্ত্রীর এ বিশেষ প্রকল্প মানুষের কোনো কাজে আসছে না।
হাওর পারের কৃষক আজমল মিয়া, বশির মিয়া, আব্দুল বারী, খালেদ আহমদ, জয়নাল মিয়া ও মতলিব মিয়া বলেন, ‘অগোছালো ভাবে মাটি ফেলে রাখায় যাতায়াতে সমস্যা হয়। গবাদিপশু কিংবা কৃষি পণ্য নিয়ে আমরা হাওরে নামতে পারি না। নদীর পুরো অংশ(প্রস্থ) খনন না করায় নৌকা চলাচলে বাধাগ্রস্থ হয়।’
হাকালুকি হাওর তীরবর্তী কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির বলেন, ফানাই নদীর অনেক স্থান আছে খননই করা হয়নি। কিন্তু প্রকল্প মেয়াদ শেষ। একাধিকবার তাদের বলার পরেও কথাগুলো আমলে নেয়নি। কোথাও মাটি ফেলে রাখা হয়েছে আবার কোথাও নেই। যার ফলে এলাকাবাসীর যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পুহাতে হয়। অসম্পূর্ণ কাজ করে দেয়ার কথা বললে আজ কাল বলে সময় পার করছে। আদৌ কতটুকু করে দিতে পারবে তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমার দাবি, ফানাই নদী খনন কাজ তদন্ত করে কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হোক।
মেসার্স মা-বাবা কন্সট্রাকশনের প্রোপ্রাইটর হাসান মোল্লা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডে কাজ করে দুই টাকা লাভবান হওয়া কষ্ট কর। মোটামুটি ওয়ার্ক ওয়ার্ডার অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করেছি। কোথাও মাটি কম আবার কোথাও মাটি বেশি থাকার কারণে কিছু ত্রুটি থাকতে পারে।
এবিষয়ে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান বলেন, যতটুকু কাজ হয়েছে এই পরিমাণ টাকাই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে। সর্বাবস্থায় প্রকল্পের কাজ দেখবাল করার জন্য অফিসের দু’জন লোক ছিলেন। এখানে দুর্নীতি করার কোনো সুযোগ নেই।

প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের ১৭ কোটী টাকার অর্ধেকই গেছে জলে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঠিক তদারকির অভাব ও কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নামকাওয়াস্তে কাজ করে বিল উত্তোলনের পায়তারা করছে।

ফানাই নদীর অনেক স্থান আছে খননই করা হয়নি। কিন্তু প্রকল্প মেয়াদ শেষ।
– ইউনিয়ন চেয়ারমেন

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT