1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
রাউৎগাঁও একটি ইউনিয়ন আর রাহেল একজন ইউনিয়ন সদস্য - মুক্তকথা
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৫ পূর্বাহ্ন

রাউৎগাঁও একটি ইউনিয়ন আর রাহেল একজন ইউনিয়ন সদস্য

কুলাউড়া সংবাদদাতা॥
  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ১৫ জুন, ২০২১
  • ৩৩১ পড়া হয়েছে

জাল দলিলের কারিগর কুলাউড়ার রাহেল মেম্বার

কারো কাছে কাঠ রাহেল, কারো কাছে জাল রাহেল নামে পরিচিত কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল আজিজ চৌধুরী রাহেল। দুইপক্ষের বিরোধের আগুনে কেরোসিন ঢেলে অপকৌশলে জমিজমা-ভিটেবাড়ি হাতিয়ে নেওয়া তার দীর্ঘ দিনের পেশা ও নেশায় পরিণত হয়েছে। তার অপকর্ম জায়েয করতে গড়ে তুলেছে গুপ্তবাহিনী। এ চক্রের সর্বনাশা দুরভিসন্ধির সালিশ বিচার ও জাল-জালিয়াতির দলিলে সংখ্যালঘু নিরীহ হিন্দু ও গরীব মুসলিম পরিবারের অনেকে আজ ভিটে-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন।

অন্যদিকে গরীবের হক ইউনিয়ন পরিষদে প্রদেয় ডিপ-টিউভওয়েল, রিলিফ, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কার্যক্রম, সৃজন কর্মসূচিতে তার বিরুদ্ধে ছয়-নয় এর অভিযোগ রয়েছে। তার ইন্দনে কুলাউড়ার এক সময়ের ইউএনও জহিরুল ইসলামকেও শারিরিকভাবে লাি ত হতে হয়েছে। এ সব চলছে নিরবে নিভৃতে। কাঁদছে বিচারের বাণী কিন্তু রাহেল মেম্বারের বেপরোয়া কার্যকলাপ কোনভাবেই থামছে না। তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না কেউ নানা হয়নানির ভয়ে। কুলাউড়ার হাশামপুর গ্রামে যেন চলছে সামন্ততান্ত্রিক মেম্বার রাজত্ব। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, প্রায় ৪০ বছর আগে রাহেল মেম্বারের পূর্বপুরুষের একাংশ কুলাউড়ার হাশামপুর গ্রামে এসে উঠতি হিসেবে বসতি স্থাপন করে।

তখন তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় তারা দিন মজুরিতে সংসার চালাতো। এক পর্যায়ে অভাবী এলাকার মানুষকে ভুলভাল বুঝিয়ে বিদেশ পাঠানোর নামে প্রতারণা শুরু করে। অনেকের ভিটেবাড়ি বিক্রির টাকা আত্মসাত করে রাতারাতি টাকার মালিক বনে যায় সে। মানুষের ভিটে-বাড়ির বিক্রির টাকায় ক্ষতিগ্রস্তরা বিদেশ যেতে না পারলেও আত্মসাতের টাকায় লল্ডনে পাড়ি জামান রাহেল মেম্বারের ভাইরা। হাসামপুর গ্রামের উত্তরাংশে কুঁড়েঘরে বসবাস করা স্মৃতি রানী জানান, ৩০/৩৫ বছর আগে তার বাড়ির উপর নজর দেয় রাহেল মেম্বারের ভাই আয়ছর ও মতিন। এই পরিবারের এক সদস্যকে সৌদি আরব পাঠানোর নাম করে ৩৭ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রথমে বসতভিটা কিনে নেয়। পরে সৌদি আরবে হিন্দুরা গেলে কেটে বস্তায় ভরে সাগরে ফেলে দেয় এ ধরণের ভয়ভীতি দেখালে তার আর সৌদি যাওয়া হয়নি। স্মৃতি রানীর পরিবারের বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন এতে চুরমার হয়ে যায়। বসতভিটা খুঁইয়ে পথে বসে যায় তারা। বর্তমানে ওই বাড়িতে প্রাচীর দিয়ে দালান ঘর নির্মাণ করেছে মেম্বারের প্রবাসী ভাই রুবেল। পাশাপাশি বাড়ির ইদ্রিস ক্বারির বসত-ভিটাও নামমাত্র টাকা দিয়ে কৌশলে নিজের দখলে নিয়ে গেছে এ চক্র। বাড়িটি দখলের সময় ঘরের ভেতর পরিবারের সদস্যদের রেখেই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে যে বাড়িতে মেম্বার পরিবার বসবাস করেন ওই বাড়িটিও ভঙ্গাই মিস্ত্রি নামের একজনের ছিল। এটিও মেম্বার পরিবারের পূর্বপুরুষেরা কৌশলে দখলে নেন বলে জানা গেছে। হাশামপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, যার বাড়ি বা জমিজমার উপর রাহেল মেম্বারের কুনজর পড়েছে তার আর রক্ষা নেই।

কলেবলে কৌশলে রাহেল এই জমির মালিক বনে যান। কেউ তার এহেন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলেই চুরি ও ডাকাতির মামলায় ঢুকানোর ভয় দেখানো হয়। হাশামপুর গ্রামের ‘ম’ আধ্যক্ষরের বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি জানান, তার একখন্ড জমি রাহেল মেম্বার কিনার জন্য বারবার চাপ প্রয়োগ করছিল। জমি বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি দেয় রাহেল। এর কয়েক দিন পর রাহেল মেম্বারের বাড়ি চুরি হয়েছে মর্মে ওই ব্যক্তির উপর থানায় অভিযোগ দেয় রাহেল। পরে পুলিশ এসে তাদের আটক করে অন্য মামলায় আসামী করে জেলে পাঠায়। এতে বাপ ছেলে এক মাস জেল খাটেন। সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই গ্রামের শৌলেন্দ্র রাম মালাকারের ভাইদের মধ্যে বসতভিটা নিয়ে বিরোধ চলছিল। রাহেল মেম্বার তাদের বিরোধ মীমাংসার নামে হাত বাড়িয়ে দেন। এক পর্যায়ে গ্রাম্য শালিস-প ায়েত বসিয়ে তাকে ওই ভিটে ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ প্রযোগ করে। এতেও কাবু করতে না পেরে তৃতীয় পক্ষের একজনকে সাজানো মালিক বানিয়ে রাহেল মেম্বার রেজিস্ট্রি করে নেয় বাড়িটি। এ ব্যাপারে শৌলেন্দ্র রাম মালাকার বলেন, ভাইদের অংশের ভূমি আমার কাছে বিক্রি করে টাকা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে বিক্রিত ভূমি রেজিস্ট্রি করে সমজিয়ে দিতে টালবাহানা শুরু করে। তখন আব্দুল আজিজ (রাহেল মেম্বার) উদ্যোগী হয়ে এ বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করে। রাহেল মেম্বার ও স্থানীয় গন্যমান্য মানুষের মাধ্যমে ফের কিছু টাকা পরিশোধ করেও জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে কালক্ষেপন করে। এ অবস্থায় বাপ-দাদার ভিটা রক্ষা করতে রাহেল মেম্বারের কাছে কিছু ফসলী জমি বিক্রি করে ভাইদের আরও টাকা দিয়ে তাদের অংশের বসতভিটা রেজিস্ট্রি করা হয়।

তখন ওই মেম্বার আমার ক্রয় করা বাড়ির কিছু অংশ কৌশলে রেজিস্ট্রি করে নেয়। শুধু তাই নয় বাড়ির আরও কিছু অংশ ভাইদের মাধ্যমে থেকে বহিরাগত রবি মল্লিকের নামে রেজিস্ট্রি করে নেয়। এইভাবে আমার খরিদা বসতভিটায় দখলদারিত্ব বহাল করে মেম্বার। এ ঘটনায় মৌলভীবাজার আদালতে দেওয়ানি মামলা করা হলে ডকুমেন্ট বিবেচনায় আদালত সোলেনামার মাধ্যমে আমার সত্য আমাকে হস্তান্তর করেন। হাশামপুর গ্রামের বয়োজেষ্ট্য আব্দুল খালিক জানান, মেম্বার পরিবারের কৌশল ও জাল-জালিয়াতির শিকার হয়ে হাসামপুরের ৬/৭টা পরিবার একেবারে নিঃশেষ হয়ে গেছেন। আমরা যেন তাকে মেম্বার বানিয়েছি মানুষের জমিজমা, বাড়িঘর গিলে খাওয়ার জন্য। বর্তমানে রাহেল মেম্বারের লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে একই গ্রামের এক সাংবাদিক পরিবারের জমির উপর। ভুক্তভোগী সাপ্তাহিক পূর্বদিক পত্রিকার সম্পাদক মুজাহিদ আহমদ বলেন, রাহেল মেম্বার আমাদের পরিবারকে হেনস্তা করে আসছে অনেকদিন ধরে। বর্তমানে যে জমি নিয়ে রাহেল মেম্বার সমস্যা সৃষ্টি করেছে ওই জমি আমাদের পরিবার ১৯৬২ ও ৬৪ সালে খরিদাসূত্রে মালিক।

এই দীর্ঘ সময় ধরে আমরা ভোগদখল করে আসছি। ওই জায়গার উপর লোভের দৃষ্টি পড়েছে রাহেল মেম্বারের। প্রথমে সে একটা পক্ষ তৈরি করে আমাদের বিরুদ্ধে। পরে শালিসের নামে এই জমি তাকে দেওয়ার প্রস্তাব করে। আমরা তাকে এই জায়গা দিতে অস্বীকার করি। পরে তার সৃষ্ট পক্ষ দিয়ে স্যাটেলম্যান্টের ৩০ ধারা ও ৩১ ধারায় আমাদের জমিতে আপত্তি দেন। বিজ্ঞ বিচারক আমাদের কাগজপত্র দেখে রায় আমাদের পক্ষে দেন। সর্বশেষ প্রিন্ট ফরছাও আমাদের পক্ষে আসে। বর্তমানে সে আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে চলেছে।

ইউপি সদস্য আব্দুল আজিজ চৌধুরী রাহেল তাঁর বিরুদ্ধে জাল দলিল ও অনিয়মের বিষয়টি অভিযোগ করে বলেন,আমি যখন ছোট ৩য় শ্রেণী পড়ি সেই সময় সাংবাদিক মুজাহিদের বাবার কিছু জায়গা আমার পিতার সাথে জমি বিনিময় হয়েছিলো। তখনকার বিষয় নিয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। তিনি বলেন, শৈলেন্দ্র মালাকারের জায়গা কিছু দিন আমার কাছে ছিল। পরবর্তীতে দলিল করে তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, সামনে ইউপি নির্বাচন তাই আমার বিরুদ্ধে একটি গ্রুপ চক্রান্ত করে এসব কুৎসা রটাচ্ছে।

কুলাউড়ার রাউৎগাঁও ইউনিয়ন

ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন ইউপি সদস্য রাহেল

হয়রানির শিকার পুরো গ্রাম

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুল আজিজ চৌধুরী রাহেলের হয়রানির শিকার পুরো হাশামপুর গ্রাম। বিশেষ করে এলাকার হিন্দু ও দরিদ্র পরিবারের জায়গা নানা কৌশলে দখল করাই তার উদ্দেশ্য। আবার একাধিক নিরিহ পরিবারের জায়গায় ভূয়া দলীল করে জোরে দখলে নেন ওই ইউপি সদস্য। কেউ প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করান। গড়ে তোলেছেন একটি শক্তিশালী বাহিনী। স্থানীয়দের অভিযোগ রাহেলকে পুলিশ প্রশাসনও পরোক্ষ ভাবে সহযোগীতা করছে। তার হয়রানির শিকার হয়ে অনেকেই এখন নিঃস্ব। জনপ্রতিনিধির আড়ালেই তিনি এসব অপকর্ম করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৯ সালের তৎক্ষালিন কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহিরুল ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে গেলে রবিরবাজারে দুষ্কৃতিকারীরা তার উপর হামলা করে। ওই ঘটনার মামলায়ও আব্দুল আজিজ চৌধুরী রাহেলকে আসামী করা হয়।

সরেজমিন হাশামপুর এলাকায় গেলে ইউপি সদস্য রাহেলের নির্যাতনের ভয়ে কেউই কথা বলতে চাননা। তারা বলেন, “আপনারা চলে যাওয়ার পর রাহেল তার বাহিনী দিয়ে আমাদের হয়রানি করবে। তবে এসময় সাহস করে শৈলেন্দ্র মালাকার নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমার ভাইদের মধ্যে জায়গা নিয়ে রাহেল বিরোধ সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে গিয়াস উদ্দিনকে তৃতীয় পক্ষ দাঁড় করিয়ে রাহেল মেম্বার গোপনে জায়গা দলিল করে নেয়। এদিকে একই গ্রামের স্মৃতি রাণী মালাকারের বাড়িতে গেলে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, সৌদি আরবে পাঠানোর কথা বলে ৩০ বছর আগে তার স্বামী মৃত মনরঞ্জণ মালাকারের বাড়ি এবং শ্মশান দখলে নেয় রাহেল মেম্বারের যোগসাজসে তার ভাইয়েরা। পরবর্তীতে হিন্দুদের সৌদি আরব নিচ্ছেনা বলে ৩৭ হাজার টাকা দিয়ে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন। রাহেল মেম্বারের অত্যাচার ও নির্যাতনের ভয়ে আমরা কিছু বলতে পারিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বৃদ্ধ চোখের পানি ফেলে বলেন, রাহেল মেম্বারের অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় পুলিশ দিয়ে আমাকে ও আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে অন্য এলাকার একটি ডাকাতির মামলায় কারাগারে পাঠায়। ১ মাস পর জামিনে বেরিয়ে আসি। আব্দুল হান্নান ও আব্দুল খালিকসহ অনেকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আব্দুল আজিজ চৌধুরী রাহেলের হয়রানিতে আমরা এলাকায় শান্তিতে বসবাস করতে পারছি না। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাকে কিভাবে হয়রানি করা যায় এই চিন্তায় ওই জনপ্রতিনিধির দিন কাটে। পুলিশের সাথে ভালো সম্পর্ক ও সম্পদের মালিক হওয়ায় সাধারণ মানুষ ভয়ে কিছু বলতেও পারেন না।
ইউপি সদস্য আব্দুল আজিজ চৌধুরী রাহেল বলেন, শৈলেন্দ্র মালাকারের জায়গা কিছু দিন আমার কাছে ছিল। পরবর্তীতে দলিল করে তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। সরকারী গভীর নলকূপ আপনার লন্ডন প্রবাসী ভাইর বাড়িতে কিভাবে স্থাপন করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই ডিপ টিউবওয়েল চেয়ারম্যানের বরাদ্দ। নির্যাতন ও অনিয়মের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল ইউপি সদস্য আব্দুল আজিজ চৌধুরী রাহেলের ভাই লন্ডন প্রবাসী রুবেলের বাড়িতে গভীর নলকূপ স্থাপনের বিষয়ে বলেন, আমার কাছে থেকে নিয়ে কাকে দিয়েছে আমি জানিনি। তবে এখন খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিব। রাহেল মেম্বারের সাথে তার এলাকার একটি হিন্দু পরিবারের জায়গা সংক্রান্ত একটি বিষয় আমার কাছে সালিশের জন্য এসেছে। ২/৪ দিনের মধ্যে সমাধানের জন্য বসব।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভুষণ রায় বলেন, “আমি যোগদানের পরে এরকম হয়নি। আমার আগে হলে সে দায়িত্ব আমি নিতে পারব না”।

কুলাউড়ার রাউৎগাঁও ইউনিয়নে ডিপ-টিউবওয়েল স্থাপন ও রাস্তা সংস্কারে দুর্নীতি

ডিপ-টিউবওয়েল স্থাপনে স্বজনপ্রীতিসহ উৎক্ষোচ গ্রহণ এবং রাস্তার ইটসলিং-এর ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে কুলাউড়া উপজেলার রাৎগাও ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউ.পি সদস্যের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ধুম্রজালসহ চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের সাথে কথা বলে জানাযায়, পানীয় জল নিশ্চিত করার জন্য উল্লেখিত ওয়ার্ডের হাসামপুর গ্রামে সংসদ সদস্যের সুপারিশক্রমে ৪টি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে গত ২০২০ সনে। ৪টি ডিপ টিউবওয়েল-এর মধ্যে হাসামপুর জামে মসজিদ-এর অনুকুলে একটি এবং মেম্বারের আপন ভাই লন্ডন প্রবাসী আব্দুল হক রুবেল, চাচাতো ভাই জনি মিয়া ও জৈনক আব্দুন নূর-এর বাড়িতে স্থাপন করা হয়েছে স্থানীয় জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধানে। সংশ্লিষ্ট সহকারী প্রকৌশলি জানান, স্টেকহোল্ডারদের নিকট থেকে প্রতি টিউবওয়েল স্থাপনের জন্য সাড়ে সাত হাজার টাকা নগদ কিংবা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে গ্রহণ করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু হাসামপুর জামে মসজিদ কর্তৃপক্ষের একাধিক সূত্র জানায়, ডিপ-টিউবওয়েল স্থাপনের ক্ষেত্রে রাউৎগাঁও ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল আজিজ রাহেল মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেছেন। অপর টিউবওয়েলগুলো বসানোর ক্ষেত্রে কতটাকা আদায় করা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে যে তিন বাড়িতে ৩টি টিউবওয়েল বসানো হয়েছে সে তিন বাড়ির মালিক হচ্ছেনÑ ইউপি মেম্ব^ারের নিজ ভাই লন্ডন প্রবাসী আব্দুল হক রুবেল অপর জন হচ্ছেন তাঁর চাচাতো ভাই পৃথিমপাশা ইউনিয়নের ভোটার জনি মিয়ার পরিবার এবং মেম্বার বলয়ের লোক আব্দুন নুর-এর বাড়িতে। এখানে মুখ চিনে মুগের ডাল বণ্ঠনের গুঞ্জন রয়েছে। এদিকে, ৮নং ওয়ার্ডের হাসামপুর গ্রামের সংযোগ সড়কের সংস্কার কাজ (ইটসলিং) নিয়ে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। যেখানে ৩শ ফুট ইটসলিং এর কথা ছিলো সেখানে হয়েছে ১৫০ ফুট, এবং অপর যে অংশে ১২০ ফুট ইটসলিং হওয়ার কথা ছিলো সেখানে হয়েছে ৭০ ফুট। রাস্তার প্রস্থের ক্ষেত্রেও কোনো “আগামাথা” নেই। কোথাও ৬ ফুট আবার কোথাও ৭ফুট। এছাড়া ইটের নি¤œমান নিয়েও কথা উঠেছে ব্যাপক। গরু মহিষের পায়ের চাপে ইট ভেঙে এবং উঠে যাচ্ছে এমন দৃশ্য সরেজমিনে দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেছেন, রাস্তার কাজে কারচুপি যেমন তেমন মসজিদের ডিপ-টিউবওয়েল বসানোতে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়, লন্ডন প্রবাসী ভাই ও অন্য ইউনিয়নের ভোটার চাচাতো ভাইদেরকে ডিপ-টিউবওয়েল প্রদানের বিষয়টি নিয়ে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। চাঁপা এ ক্ষোভে বিষ্ফোরণ ঘটতে পারে যে কোনো সময়।

এ বিষয়ে সাবেক মেম্বার আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, আপনারা সরেজমিনে যা যা শুনেছেন এবং দেখেছেন এসবের নিশ্চই সত্যতা আছে বলেই লোকজন তাদের কষ্টের কথা আপনাদের কাছে তুলে ধরেছেন। নিপীড়িত মানুষগুলো আসলে দুঃখ বলার সুযোগ পায় না। এসবের বাস্তবতা আছে। বর্তমান মেম্বার সাহেবের কর্মকা- সত্যিই দুঃখজনক। যা সাধারণ মানুষ তার কাছে আশা করেন না।

রাউৎগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল বলেন, বিষয়টি যদি এমন হয় তাহলে দুঃজনক। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। যদি ঘটনাটি সত্য হয় তাহলে আমার পক্ষ থেকে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। আমি দুর্নীতি পছন্দ করিনা, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেইনা।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT