1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
জীবন্ত দেবী -৩ - মুক্তকথা
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন

জীবন্ত দেবী -৩

তনিমা রশীদ॥
  • প্রকাশকাল : রবিবার, ২০ জুন, ২০২১
  • ১২৯১ পড়া হয়েছে

কাঠমান্ডুর প্রধান কুমারী যখন মহলেই শিক্ষকদের কাছে পড়াশুনা করছেন, তখন ভক্তপুরের কুমারীকে স্কুলব্যাগ আর নাস্তা নিয়ে ছুটতে হয় স্কুলের দিকে। নেপালে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে কুমারী যাত্রা উৎসব উদযাপিত হয়। দিনক্ষণ মিলিয়ে সেখানে গেলে আপনিও হয়তো কুমারীর দেখা পাবেন।কিন্তু কুমারী দেবী হয়ে জীবন কাটানো মুটেও আনন্দের নয়। একবার ভেবে দেখুনত। একটি নাবালিক মেয়ে যার বয়স এখন খেলাধূলা করার পরিবারের সাথে সময় কাটানো আর সে নাকি দেবী সেঁজে মন্দিরে বসে আছে। আবার সে যে তাদের দেবী তা প্রমাণ করার জন্য তাকে কঠিন পরিক্ষা দিতে হয়। প্রথমত এটি একটি হাস্যকর কথা যে একজন দেবী তার দেবী হওয়ার প্রমাণ তার ভক্তদের দিতে হচ্ছে। যাই হোক যেহেতু একজন কুমারী দেবীর বয়স পাঁচ থেকে পনের বছর বয়সী হয়ে থাকে। তাহলে চিন্তা করে দেখেন এই বছরের শিশুকে দেবী হওয়ার জন্য কত কঠিন পরিক্ষা দিতে হয়। সে যদি একা অন্ধকারে রাতে মহিষ ও ছাগলের কাঁটা মাথা এবং কিছু মুখোশ পরা অবস্থায় নৃত্য করতে দেখে তাহলে কি সেই পাঁচ বছরের শিশুর মানসিক ভারসাম্য ঠিক থাকবে। তার মানসিক অসুস্থ হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। তারপর আবার সে যদি এই পরিক্ষায় উর্ত্তিণ তাহলে তাকে একটি ঘরে একা এসব কাটা মাথার সঙ্গে থাকতে হবে। এ পরিক্ষায় উত্তির্ণ হওয়া মুখের কথা না। তারপর দেবী হওয়ার পর তাকে তার ভক্তদের মনযুগীয়ে থাকতে হবে। তার মধ্য থেকে শিশুর প্রতিচ্ছবি সরিয়ে একজন দেবীর প্রতিচ্ছবি গড়তে হবে যা একটি অপূর্ণ বয়স্ক শিশুর জন্য কষ্টকর। তারপর আবার সে সারা জীবন কুমারী দেবী হয়ে থাকবে না। তার প্রথম মাসিক হওয়ার সাথে সাথে সে কুমারী দেবী থেকে সাধারণ কুমারীতে পরিণত হয়। তখন সে আবার তার সাধারণ জীবনে চলে যায়। তাহলে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন এই কুমারী দেবী স্থায়ী কোনো মেয়ে নন বরং তা সময়ে সময়ে পালটানো হয়। তবে জানেন নেপালে এমন একজন কুমারী দেবী ছিলেন যিনি ৬০ – ৭০ বছর কুমারী দেবী হিসেবে পূজিত হয়েছেন। কারণ তার কোনো দিন মাসিক হয়নি। তিনি বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে তাকে দেবী থেকে পরিবর্তন করে অন্য একজন দেবী করা হয়।

নেপালে এই কুমারী পূজার বিরুদ্ধে অনেক মেয়েরা আন্দোলন করে। কারণ এই কুমারী পূজার কারণে অনেক মেয়েদের শৈশব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একটি শিশুকে দেবী সাজিয়ে তাকে তার মা-বাবার কাছ থেকে আলাদা করে দূরে রাখা কি সম্ভব। একটি পাঁচ বছরের শিশু কি তার মা-বাবা ছাড়া থাকতে পারবে। সে কি দেবী হওয়ার কর্তব্য পালন করতে পারবে। সে-তো দেবী কে সেটাই বুঝতে পারবে না। যে বয়সে তারা খেলাধুলার প্রয়োজন, পরিবারের সঙ্গে, বন্ধু-বান্ধবীর সঙ্গে সময় কাটানো প্রয়োজন। সেই বয়সে সে মন্দিরে বসে ভক্তদের দুঃখ দূর্ধষার কথা শুনছে। এসব কি তাকে মানসিক ভাবে আঘাত করবে না। আবার আজব তো সে একজন দেবী কিন্তু সে ভক্তদের দ্বারা পরিচালিত। তাকে সেভাবে থাকতে হবে যেভাবে ভক্তরা চায়। সে সারাক্ষণ মন্দিরে বসে থাকতে হবে কারণ ভক্তরা তার দর্শন পেতে মন্দিরে আসবে। সে তার নিজ বাড়িতে গিয়ে থাকতে পারবে না। তাকে তার নির্দিষ্ট মহলে থাকতে হবে। তাকে সবসময় তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না। মাঝে মাঝে ক্ষনিকের জন্য দেওয়া হয়। এসব কারণে নেপালের মেয়েরা আন্দোলন করে। কিন্তু র্ধমের উপর তো কারো জোর চলে না। (শেষ)

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT