1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
কাশিমপুর পাম্প হাউজের সুফল ভোগ করছে কৃষক - মুক্তকথা
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন

কাশিমপুর পাম্প হাউজের সুফল ভোগ করছে কৃষক

রাজন আহমদ॥
  • প্রকাশকাল : সোমবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৬২৩ পড়া হয়েছে

 

কাউয়াদিঘী হাওরাঞ্চলে আমন উৎপাদনে রেকর্ড

‘ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই- ছোট সে তরী/আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি’

কবিগুরুর সোনার তরী কবিতার এ পঙ্গক্তিমালা যেন এবারের আমন ধানের বাম্পার ফলনে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে পরেছে কাউয়াদিঘী হাওর পাড়ের প্রতিটি গ্রামে। কৃষকের গোলা ভরে উঠেছে বিভিন্ন জাতের ধানে। কৃষক সোনালী ধান পেয়ে ভুলে গেছে হারভাঙ্গা খাটুনি আর ঘাম ঝরানো কষ্টের কথা। প্রত্যেক কৃষকের মুখে, মুখে এক অনাবিল আনন্দের ঝিলিক।

সম্প্রতি মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার কাউয়াদিঘী হাওর পাড়ের রসুলপুর, রায়পুর, বানেশ্রী, পাড়াশিমইল, কান্দিগাঁও, জগৎপুর, বড়কাপন, বিরাইমাবাদ, কচুয়া, একাটুনা, উলুয়াইল, কাশিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকা সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে হাওয়ায় দুলছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালী ধান। রোদের আলোয় চিকচিক করছে পাকা ধানের প্রতিটি শীষ। সারা জেলার ন্যায় মনু নদী সেচ পকল্পভুক্ত এলাকায় এখন পুরো ধমে চলছে ধান কাটা, মাড়াই এবং শুকানোর কাজ। মাঝে কিছুটা রোগ – বালাই আসলেও সব শষ্কা কাটিয়ে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কাশিমপুর পাম্প হাউজের পাম্পগুলো বিকল থাকায় মাসের পর মাস যে জমিগুলো পানিতে ডুবে থাকত, নতুন পাম্প স্থাপনে সে জমিগুলোতেই এখন আমন চাষ হচ্ছে। গত দুই বছর ধরে হাওর কাউয়াদিঘী এলাকায় আমন চাষে কৃষকেরা লাভমান হচ্ছেন। এবছর কাশিমপুর পাম্প হাউজ নিয়মিত পানি নিষ্কাশন করা এবং বৃষ্টি তুলনামূলক কম হওয়ায় কাউয়াদিঘী হাওরের অনেক নিচু জমিতেও আমন চাষ হয়েছে। যা মৌলভীবাজার জেলায় আমন উৎপাদনে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, এবছর মৌলভীবাজারে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ হলেও, বি- ৪৯ জাতের ধানটি কৃষকরা বেশী চাষ করেছেন। এছাড়া বি-ধান ১১, ৮৭, ৭৫, স্বর্ণামুসুরী, চিনিগুড়া, কালিজিরা এবং বিরইনসহ নানান জাতের ধান ফলেছে।

ছবি: মুক্তকথা। সংগ্রাহক: রাজন আহমদ

কাউয়াদিঘী হাওর পাড়ের বিরাইমাবাদ গ্রামের কৃষক মো. আনছার মিয়া ১০ একর জায়গায় আমন চাষ করে খরচ হয়েছে দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা। প্রতি একর জমি থেকে ধান পাচ্ছেন ৫০ মন করে। সংবাদ মাধ্যমের এই প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, ‘সব খরচ পরেও প্রায় দুই লক্ষ টাকা লাভ করতে পারবেন।’
রসুলপুর গ্রামের কৃষক মুহিব খান বলেন, ‘কাশিমপুর পাম্প হাউজ নিয়মিত পানি নিষ্কাশন করার কারণে হাওরের অনেক নিচু জায়গায়ও আমন চাষ করতে পেরেছি। ধান কাটা এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে এসেছে। ধান কাটার লোকজনের মুজুরী বেশী থাকলেও ফসল ভালো হওয়ায় তা, বহন করা করা সম্ভব হয়েছে।’ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক কৃষিবিদ কাজী লুৎফুল বারী সংবাদ মাধ্যমের এই প্রতিনিধিকে বলেন, ‘গত বছর থেকে এবার মৌলভীবাজারে আমনের চাষ প্রায় এক হাজার হেক্টর বৃদ্ধি পেয়েছে। কাউয়াদিঘীসহ অন্যান্য হাওরাঞ্চলে সাধারণত বোরোধান চাষ হত, কিন্তু এবছর বৃষ্টপাত তুলনামূলক কম হওয়ায় এবং মনু নদী সেচ প্রকল্পের আওতায় কাশিমপুর পাম্প হাউজ কাউয়াদিঘী হাওরের পানি নিয়মিত নিষ্কাশন করার ফলে হাওর পাড়ের কৃষকগণ আমন ধানের ব্যাপক চাষ করতে পেরেছেন। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন হাজার কৃষককে বিনামূল্যে ৩০ কেজি সার ও ৫ কেজি করে বীজ দিয়েছি। এছাড়া আমাদের মাধ্যমে নাভি জাত বীজ সহজলভ্য করে দেওয়া হয়েছে।’

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘হাওরের ৪২টি খাল খননের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, ইতিমধ্যেই জরিপ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। কৃষকের স্বার্থে কাউয়াদিঘী হাওরের পানি নিষ্কাশনের দ্বারা অব্যাহত থাকবে।’

ধান সংগ্রহ চলছে। ছবি: মুক্তকথা। সংগ্রাহক: রাজন আহমদ

কাশিমপুর পাম্প হাউজের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী(যান্ত্রিক) এম. এ হান্নান খাঁন বলেন, ‘জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সুবিধাভোগী স্থানীয় কৃষকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে কাশিমপুর পাম্প হাউজের মাধ্যমে কাউয়াদিঘী হাওরের পানি নিষ্কাশন নিশ্চিত করা হয়েছে।’

হাওর রক্ষা সংগ্রাম কমিটি মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি এডভোকেট ময়নুর রহমান মগনু এই প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন কাউয়াদিঘী হাওরের জলাবদ্ধতা নিরসন ও কাশিমপুর পাম্প হাউজে নতুন পাম্প স্থাপনের জন্য আন্দোলন – সংগ্রাম করেছি। নতুন পাম্প স্থাপনে হাওরে এখন আর জলাবদ্ধতা না থাকায় স্থানীয় কৃষকেরা এর সুফল ভোগ করছেন। কৃষক এবং প্রান্তিক জেলেদের স্বার্থে হাওরের নদী -নালা ও খাস জমি দখলমুক্ত করে হাওরের জীব-বৈচিত্র রক্ষা করতে হবে।’

হাওর রক্ষা সংগ্রাম কমিটি মৌলভীবাজার সদর উপজেলা সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, সরকারিভাবে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার পরিমাণটা কম হওয়াতে, কৃষকেরা বাধ্য হয়ে স্থানীয় ফরিয়া ব্যবসায়ীদের কাছে ধান বিক্রি করেন। কৃষকের স্বার্থে ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাটা একান্ত জরুরি, না হলে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই হাজার, হাজার কৃষকের স্বার্থে সরকারিভাবে ধান কেনার পরিমাণ আরো বাড়াতে হবে।

 

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT