1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
রোহিঙ্গা আর আরাকান - মুক্তকথা
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৪ অপরাহ্ন

রোহিঙ্গা আর আরাকান

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬
  • ৮০৯ পড়া হয়েছে

হারুনূর রশীদ।।  

বৃহস্পতিবার, ২৯শে অগ্রহায়ণ ১৪২৩।।  আরাকানকে নিয়ে লেখা-লেখি গবেষণা বেশুমার হয়েছে। পাথর খোদাই থেকে শুরু করে কাগজে পত্রে লেখা আছে তার বহু বেদনার কাহিনী। অবিনাশী সময়ের মোড়ে মোড়ে আরাকানের ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে বহুবার। এই সেদিনও নতুন করে গবেষণায় হাত দেয় মায়ানমার সরকার। এ দায়ীত্ব দেয়া হয়, স্থাপত্য বিদ্যার অধ্যাপক ‘উ মিও মিন্থ সেইন’কে। কিছু প্রাচীন নিদর্শন এলাকা খনন করা হয় ১৯৮০ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বর্তমান মায়ানমারের ডাইরেক্টর জেনারেল ইউ নান্ত হান এর দ্বারা। মায়ানমার সরকারও ১৯৯৬সালে প্রাচীন এই ‘এমরাউক ইউ’(Mrauk-U) শহরের পর্যটনের সম্ভাবনার বিষয় অনুধাবন করে ঐতিহ্যের এলাকা বলে মেনে নেয়। সরকার, প্রধান প্রধান সৌধগুলোর সংস্কারে তহবিল দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। ভেসালি ও মারাউক-ইউ খনন কাজও শুরু হয়। এ সবকিছুই আরাকানকে ঘিরে।

এই আরাকানিদের মধ্যে কোন সম্প্রদায় সবচেয়ে প্রাচীন বসতস্থাপনকারী এ ব্যাপারে এখনও কেউ নিশ্চিত কিছু বলতে পারেন না। তবে, খুব সম্ভবতঃ কয়েকটি নৃগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করা হয়েছে যারা আরাকানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও বসবাস করছে যেমন- ‘চিন’, ‘দি ম্র’ এবং ‘সাক’ নৃগোষ্ঠী।

গবেষকদেরই মতে বর্তমানে রাখাইনরাই নিয়ন্ত্রণকারী প্রধান গোষ্ঠী। আরাকানীদের নিয়ে মায়ানমারের গবেষণা অন্তহীন। আরাকানী মানুষের মূল কোথা থেকে এসেছে এ বিষয়ে দেশের প্রচলিত ইতিহাস বলে যে সুদূর অতীতের কিংবদন্তীর সেই আরাকানীদের পূর্বসূরী মহাপরাক্রম “মারায়ূ” যিনি আরাকানের প্রথম শহর “ধন্যাবতী”র প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। কথিত আছে, তিনি “ম্র” গোষ্ঠী প্রধানের কন্যাকে বিবাহ করেন এবং বিলাস দেশকে অপদেবতা পিচাশকুলের হাত থেকে রক্ষা করেন। আনুমানিক ৪ শতাব্দীর কিছু কিছু তথ্যসূত্র দেশের এ ইতিহাসকে সমর্থন করে। ৬ষ্ঠ শতকের রাজার একটি পাথরলিপি যা বহু রাজধানী ঘুরে ১৬শ শতাব্দীতে “ম্রাউক-ইউ”তে এসে পৌছায়। ওই লিপিমতে বৌদ্ধ ঐতিহ্য আরাকানিদের সংস্কৃতি গঠনে প্রধান নিয়ামক ভূমিকা পালন করে এবং অবশ্যই সারা বার্মার বিষয়েও একই কথা চলে তাই গবেষকদের অনুমান।

৮ম শতকে ব্যাপকভাবে তিব্বতীয়ান ও বার্মীজদের যৌথ আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়ে পরে পূর্ববাংলা ও  আরাকানের বিভিন্ন জনপদ। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শহরগুলিকে ‘পেগান’ মতবাদে বিবর্তিত করা। ঐ সময় যারা আরাকানকে শাসন করতো তারা নিজেরাই তাদের নাম দিয়েছিল রাখুইন বা রাখাইং। ১৪০৪ সালে ব্রহ্মদেশ আবারো দখল করে নেয় আরাকানের শহর “লংগ্রেত” আর রাজা “মিন সো মুন” পালিয়ে গৌড়ের সুলতানের আশ্রয় নেন। ইতিহাস বলে, মিন সো মুন গৌড়ের সুলতানের সহায়তায় রাজ্য ফিরে পান। তিনি মুসলমান খেতাব ধারণ করে রাজ্যাসনে বসেন এবং তার জোতিষের পরামর্শে পুরানো রাজধানী ত্যাগ করে নতুন রাজধানী গড়ে তুলেন ১৪৩৩সালে। নাম রাখেন “ম্রাউক-ইউ”। মূলতঃ আরাকানে মুসলমানদের প্রভাব তখন থেকেই গড়ে উঠে। পর্তুগীজ ধর্মপ্রচারক ফাদার এ, ফেরিনহা ১৬৩৯ সালে এই “ম্রাউক-ইউ” শহর দেখেন এবং নাম লেখেন “আরাকান”। তিনি সেই সময়ের আরাকানের খুব সুন্দর বিবরণ দিয়েছেন। রাজা “মিন সো মুন” এর রাজ্য ফিরে পাবার পর স্বাভাবিক কারণেই শতবর্ষকাল আরাকান বাংলার করদরাজ্য ছিল। এসময়ের আরাকানের রাজাগন ধর্মে বৌদ্ধ হলেও তারা মুসলমান নামও ধারণ করতেন। এ সময়ের অনেক পয়সায় ফারসি ভাষায় কলেমা লেখা পাওয়া যায়। রাজা মিন সো মুন’এর ভাই যার নাম ছিল “আলি খান” বর্তমান চট্টগ্রামের সাগরতীরের রামু শহর দখল করেছিল বলে কথিত আছে। আলি খা’র ছেলে “বা সো প্রো” কলিমা শাহ নামে পরিচিত ছিলেন এবং তিনি একসময় চিটাগং দখল করেন বলে জানা যায়।

এ সময়ই মোগলসম্রাট হুমাইউন বাংলা দখল করে নেন। গৌড় চলে যায় মোগলদের হাতে। দীর্ঘ মেয়াদী এক অরাজকতা শুরু হয়। এ সুযোগে “মিন বিন” বাংলার উপকূলীয় এলাকা দখল করে নেন। যা প্রায় একশত বিশ বছর অর্থাৎ ১৬৬৬ সাল অবদি আরাকানের দখলে থাকে।

এসময়ই শাহ সুজা তার ভাই আওরঙ্গজেব কর্তৃক পরাজিত হয়ে আরাকানে আশ্রয় চান। রাজা সন্দাতুদ্ধামা বাংলার সুবেদার সুজার ঐশ্বর্য্য ও তার রূপবতী কন্যার লালসায় আশ্রয় দেন। কিন্তু সুজার নিকট রাজার ইচ্ছা ধরা পড়ে গেলে সুজা যুদ্ধ ঘোষণা করেন এবং পরাস্ত হয়ে পরিবার সহ মৃত্যু দন্ডে দন্ডিত হন এই আরাকানেই।
এই সেই আরাকান যেখানে আবার শুরু হয়েছে বার্মিজদের অত্যাচার। লুন্ঠন, নারীধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ আর মানুষ হত্যা কোনটাই বাদ যায়নি। এখন দেখার বিষয় জাতিসংঘ আর নোবেল বিজয়ী অং সু প্রো ইতিহাসের গতি কোন দিকে নেন।

(আরাকানি নিউজ এজেন্সি ‘নারানজারি’ থেকে সংগৃহীত ও অনুদিত। অনুবাদ: হারুনূর রশীদ)]

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT